ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রশাসন ও ইনভেস্টরদের চুক্তিজটের বিষয়টি এমন এক জায়গায় গিয়েছে, তা নিয়ে বারবার রং বদল ঘটছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা অপ্রীতিকর কাণ্ড সামনে আসছে। তার মধ্যে সমর্থকরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করায় বিষয়টিতে অন্য মাত্রা যোগ হয়েছে। আর ইস্টবেঙ্গলের জটিল পরিস্থিতির জন্য যে রাজ্যের মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী, সেটি এবার জানালেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তিনি দিল্লি থেকে টুইটারে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন, তাতে তিনি পরিষ্কার বলছেন, লাল হলুদ সমর্থকরা যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা করেছিলেন, তাতে তিনি তাঁদের ডুবিয়েছেন। তাঁদের আবেগ নিয়ে খেলেছেন। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর ভরসায় থেকে ক্লাবের এই দুর্দশা। লাল হলুদ সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে কোন্দলে তিনি যে ব্যথিত, সেটি উল্লেখ করে দিলীপ বাবু বলেছেন, ”গতবছর শ্রী সিমেন্ট নামে এক কোম্পানিকে নিয়ে গিয়ে আইএসএল খেলানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
তিনি সেটি করেছিলেন নবান্নতে, কারণ সেইসময় নির্বাচন ছিল, সেটি মনে রেখেই ওই কোম্পানির সঙ্গে ক্লাবের মৌ চুক্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চুক্তি যে এই মুহূর্তে ক্লাবের মৃত্যু পরোয়ানায় পর্যবসিত হয়েছে, সেটি সবাই এখন বুঝতে পারছে।”
রাজ্যের বিরোধীপক্ষের নামী নেতা আরও বলেছেন, ”লাল হলুদের কোটি কোটি সমর্থকের আবেগ নিয়ে খেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করলে সেটি আর ক্লাব থাকবে না, সেটি হয়ে যাবে কোম্পানি। সেইসময় সদস্য-সমর্থকদেরও ক্লাবে প্রবেশ করতে গেলে অনুমতি নিতে হবে। ক্লাবের সচিব ও সভাপতি থাকলেও সেই পদ হয়ে যাবে নামকোওয়াস্তে।
এটি এখন ভালই বোঝা যাচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী গতবার রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ওই কোম্পানিকে হাত ধরে নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করিয়েছিলেন, সেই কথাও মনে করিয়ে দেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর মন্তব্য, ”ক্লাবের ভবিষ্যত্ এই মুহূর্তে অন্ধকার, তারা কী আদৌ আইএসএলে খেলতে পারবে? তারা কি দলগঠন সারতে পারবে, সেই প্রশ্নের উত্তর অজানা।”
দিলীপ বাবু আরও জানান, লাল হলুদের যে সমর্থকরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে খেলা দেখেন, সেইসব সমর্থকদের আবেগ নিয়ে খেলার অধিকার কোথা পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। এটি যে শুধু ইস্টবেঙ্গল জনতাকে অপমান নয়, বরং সারা বাংলার অপমান, সেই কথা বলেও বিঁধেছেন বিজেপি নেতা।
প্রসঙ্গত, বুধবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার লাল হলুদ সমর্থক। তাঁরা নিজেদের মধ্যে কলহে মাতেন, আক্রান্ত হন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা, এমনকি কয়েকজন সমর্থককে গ্রেফতারও করে পুলিস। তারা লাঠিচার্জ করে সমর্থকদের বিক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেছেন।
সূত্র: দ্য ওয়াল