নিজের ছাতা নিজে ধরো, মোদীকে বার্তা মমতার
নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আধঘণ্টা বৈঠক (Modi Mamata meeting)। বেরিয়ে এসে দিল্লির সাংবাদিকদের মন জয় করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নিরাপত্তারক্ষী থাকতেও নিজের ছাতা নিজেই ধরলেন। সাংবাদিকদেরও বললেন, “বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসবে। আপনারা ছাতা নিয়ে নিন।” সৌজন্য বলতে এইটুকুই, দিল্লি বিকল্প নিয়ে চর্চা শুরু করে দিল।
কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ছবি। বর্ষা অধিবেশনের শুরুতে সংসদ ভবনে হাতে ছাতা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন নরেন্দ্র মোদি। বিজেপির সমস্ত স্তরের নেতারা সেই ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ছাতা ধরার জন্য কারও সাহায্য দরকার পড়ে না।
প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিজের ছাতা ধরতে পারেন। তাঁরাও এই বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁরা বোঝাতে চাইছিলেন প্রধানমন্ত্রী সাধারণ, সাধারণে অনেক কাছাকাছি। কিন্তু সাধারণত্ব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দেওয়া কঠিন, বিলক্ষণ জানেন পক্ষ-বিপক্ষের সবাই।
আজ ছিল তাঁর বল ফেরানোর পালা। দিল্লির সাউথ অ্যাভিনিউতে নিজের পার্টি অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। নিতান্তই সাধারণের ব্যবহার্য ছাতাটি, মালিন্য নেই, তবে জাঁকজমকও নেই। সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর আগে বারবার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে তাঁকে বলতে শোনা গেল, “ছাতা নিয়ে নিন আপনারা। ছাতার নীচে আসুন। জ্বর আসবে।” তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ ঘটনাটি দেখেছেন টিভি খুলেই।
উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে ফেললেন, “এটা ট্রেলার। ২০২৪-এ গোটা দেশের মাথায় ছাতা ধরবেন তিনি।” কুনাল ঘোষের কথায়, “বিজেপির কোনও কাজ নেই। সব জিনিস কপি করে। স্কিম কপি করে। অথচ দেখুন স্কিমগুলির জন্য বাংলা কিন্তু প্রথম পুরষ্কার পায়। আজ নিজেই নিজের ছাতা নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় দাঁড়িয়েছেন। বন্যায় এগিয়ে যেতে যেতেন। আসলে শুধু ট্যুইট মালব্য আর ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে হয় না। ভাইরাল করে সবটা হয় না। হেলিকপ্টার থেকে বন্যা দেখা আর পা ভেজানো জলে এক জিনিস নয়।”
হাতে মামুলি ছাতা। সাংবাদিক বৈঠকে এলেন মমতা।
প্রায় ১৫ মিনিটের সাংবাদিক সম্মেলন চলে সাউথ অ্যাভিনিউতে। সারাটা সময় বৃষ্টি পড়তে থাকে। এবং গোটা সময়টাই বাম হাতে ধরে থাকলেন। ডান হাতে মাইক নিয়ে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেন অবলীলায়।
নিরাপত্তারক্ষীরা সজাগ থাকলেও মমতা বন্দোপাধ্যায় ওটুকু নিজেই করে নিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, তিনি তো নীচুতলা থেকে উঠে আসাদেরই একজন। ছাতা ধরার লোক লাগবে না তাঁর। রাজনীতির গূঢ় আলোচনার মাঝে মমতার এই ফাইন টাচই বলে দিল কেন তিনি বারবার তিনবার নিজের চেয়ারে।
উল্লেখ্য, এদিন প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠক হয় মমতা মোদির। মমতা বললেন, জনসংখ্যার নিরিখে কম টিকা পেয়েছি। রাজ্যের নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে দেখা করবেন মমতা। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিনি দেখা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে ওই দিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা হবে তাঁর।
সূত্র : নিউজ ১৮