হাওড়ায় বন্যায় জলের তোড়ে ভেসে প্রাণ গেল ক্লাস টেনের ছাত্রী
টানা বৃষ্টি ও ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে ভাসছে উদয়নারায়ণপুর। এলাকাবাসীর মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো মাত্রায়। সেই আতঙ্কের তালিকায় যুক্ত হল এক চোদ্দ বছরের কন্যার স্রোতে ভেসে যাওয়ার ঘটনা। মৃত কিশোরীর নাম রিমা রক্ষিত। পরিবারের কথায়, মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির সামনে দিয়ে তীব্র বেগে বয়ে যাওয়া জলে ভেসে যায় রিমা।
বাড়ির বেশ কিছুটা দূর থেকে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। এরপর উদয়নারায়ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। টানা বৃষ্টির ফলে এমনিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উদয়নারায়ণপুর। তার ওপর গত দু’দিন আগে ডিভিসি তার লকগেট খুলে দেয়। সেখান থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। মঙ্গলবারও ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়। ফলে গ্রামগুলিতে জলস্তর প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আশঙ্কা আরও প্রাণহানির।
ইতিমধ্যে সাপের উপদ্রব শুরু হয়েছে। জলে ডুবে থাকা ঘরে ঢুকে পড়ছে নানা বিষধর সাপ ও পোকামাকড়। এছাড়া পানীয় জলের সমস্যা দেখা গিয়েছে। চাষের জমিও ক্ষতির মুখে। ২০১৬-২০১৭ সালে একই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ছিল উদয়নারায়ণপুর। উদয়নারায়ণপুরের প্রায় ১০০টি গ্রাম জলের তলায়। কোথাও জল বুক সমান, আবার কোথাও কোমর সমান। ঘরছাড়া বহু পরিবার।
এদিন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র উদায়নারায়ণপুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। তিনি বলেন, খানাকুলের পর বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাওড়া। ঘাটালের পরিস্থিতিও ভালো নয়। প্লাবনের জন্য ডিভিসিকেই দায়ী করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন যে, বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখছি। প্রয়োজনীয় সামগ্রিক গ্রামবাসীদের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে।
মূলত যাতে কোনো প্রাণহানি না ঘটে সেইদিকে নজর থাকছে। কিন্তু তারপরেও কিশোরীর মৃত্যু ঘটায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীর মধ্যে। এই রকম ভয়াবহ বন্যা গত কয়েক বছরে উদয়নারায়ণপুর দেখেনি। কবে বন্যার জল নামবে, তা নিয়ে চিন্তায় দিন কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
সূত্র : দ্য ওয়াল