ঝাড়গ্রাম: মাতৃদুগ্ধ শুধুমাত্র পুষ্টির উৎস নয়, শিশুর স্বাস্থ্যের পক্ষেও যেমন উপকারী, তেমনই মায়ের সঙ্গে শিশুর মানসিক বন্ধনেও সমান সহায়ক। ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ’ উপলক্ষে বুধবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এভাবেই মায়েদের সচেতন করা হল। এদিন মানিকপাড়া প্রগতিসদনে আয়োজিত ওই সচেতনতা মূলক আলোচনাসভায় ছিলেন মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান কল্যাণী মুদি, উপপ্রধান মহাশিস মাহাতো, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি দীপাংশু চক্রবর্তী, সুষমা নায়ক, হরিপ্রিয়া মাহাতো প্রমুখ।
উপপ্রধান মহাশিস মাহাতো জানান, ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ’ (১-৭ অগস্ট) উপলক্ষে পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব বোঝাতে জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি চলছে। এলাকায় গিয়ে মহিলাদের বোঝানো হচ্ছে, জন্মের প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধই খাওয়ানো উচিত। তার কারণ: মাতৃদুগ্ধ শিশুকে পাকাশয় ও অন্ত্রের সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এই দুধ তাড়াতাড়ি হজম হয় এবং এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় না। এ ছাড়াও এই দুধ শিশুর পাকাশয় ও অন্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মাতৃদুগ্ধ শিশুর নাক ও গলার ঝিল্লির উপর আস্তরণ তৈরি করে হাঁপানি ও কানের সংক্রমণ থেকেও শিশুকে রক্ষা করে।
গরুর দুধে অনেক শিশুর অ্যালার্জি হয়। তুলনায় মাতৃদুগ্ধ ১০০ শতাংশ নিরাপদ।
এদিন আলোচনা সভায় হরিপ্রিয়ারা জানান, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সব শিশু জন্ম থেকে মাতৃদুগ্ধ খেয়ে থাকে তাদের ভবিষ্যতে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কারণ তারা খিদে অনুযায়ী খেতে শেখে। ফলে শুরু থেকেই তাদের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম থাকে।
শৈশবে লিউকোমিয়া হওয়া থেকে মাতৃদুগ্ধ রক্ষা করে। বড় বয়সে ডায়াবিটিস টাইপ ১ এবং উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কাও কম থাকে।
মাতৃদুগ্ধে শিশুর বুদ্ধি বাড়ে। কারণ, প্রথমত শিশুর সঙ্গে মায়ের একটা বন্ধন তৈরি হয় এবং দ্বিতীয়ত মাতৃদুগ্ধে এমন সব ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা শিশুর মগজের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে।
নবজাতকদের স্তন্যপান করলে নতুন মায়েদের তাড়াতাড়ি ওজনও কমাতে সাহায্য করে।