সাহিত্যজগতে আরও এক ইন্দ্রপতন, প্রয়াত বুদ্ধদেব গুহ
৩৩ দিন হাসপাতালে কাটিয়ে, করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছিলেন মাস চারেক আগে। একাধিক বার তুচ্ছ করেছেন তাঁকে ঘিরে ঘনিয়ে ওঠা মৃত্যুর গুজব।
কিন্তু এবার আর শেষরক্ষা হল না। নিভে গেল প্রাণবায়ু, চলে গেলেন সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ (buddhadeb guha)। গতকাল, রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শহরেরই এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান (death) তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর থেকেই কার্যত অসুস্থই ছিলেন তিনি। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে দেয়নি এই সংক্রমণ। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আবারও। শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল, ছিল ইউরিনারি ইনফেকশন।
আরও পড়ুন : ঝুলিতে আরও একটি পদক, প্যারালিম্পিক্সের ডিসকাস থ্রো’য়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন বিনোদ কুমার
একসময় আইসিইউতে স্থানান্তর করতে হয় তাঁকে। দিনকয়েক লড়াই করার পরে চলে গেলেন সাহিত্যিক। ১৯৩৬ সালের ২৯ জুন কলকাতায় জন্ম নিয়েছিলেন বুদ্ধদেব গুহ। পেশাগত জীবনে ছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে। কিন্তু তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায় প্রকৃতি, অরণ্য, শিকার, বেড়ানো আর প্রেম। তাঁর ছোটগল্প ও উপন্যাসে পাঠক পান এক স্বপ্নালু বিমূর্ততা আর রোমান্টিক আবেদন।
ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও পূর্ব আফ্রিকা-সহ বহু জায়গায় ঘুরেছেন। ভারতের অধিকাংশ রাজ্য ও জঙ্গল তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। তাঁর উপন্যাস ‘মাধুকরী’ বাংলা সাহিত্যের জগতে মাইলফলক বলা যেতে পারে।
আরও পড়ুন : মাত্র দশ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু হয়েছিল, বর্তমানে চাঁদনীর মাসিক আয় দেড় লক্ষ টাকার বেশি
‘সবিনয় নিবেদন’ তাঁর বিশেষ পরিচিত পত্রোপন্যাস। তাঁর পাঠকপ্রিয় অসংখ্য উপন্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কোয়েলের কাছে’, ‘কোজাগর’, ‘নগ্ন নির্জন’, ‘বাতিঘর’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘বাবলি’, ‘চান ঘরে গান’, ‘বাংরিপোসির দু’রাত্তির’, ‘বাজা তোরা, রাজা যায়’, ‘ঝাঁকিদর্শন’ ইত্যাদি।
পেয়েছেন আনন্দ, শিরোমণি ও শরত্ পুরস্কার। সব কিছু ফেলে রেখে অজানায় পাড়ি দিলেন তিনি। এ বছরেই সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষকে কেড়ে নিয়েছে করোনা। এবার সাহিত্যের আরও এক দিকপাল চলে গেলেন, করোনা-পরবর্তী ধাক্কা সামলাতে না পেরে।