দক্ষিন দিনাজপুর

ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে না পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী দম্পতি

ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে না পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী দম্পতি - West Bengal News 24

ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে ব্যাঙ্কের ইএমআই দিতে পারেননি। সেই মানসিক অশান্তি থেকেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক দম্পতি। সোমবার সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডির জেলার বাদবিকর এলাকায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কুশমণ্ডি থানার পুলিশ। পরে দেহ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তিদের নাম সত্যেন সরকার (৬০) ও তুফানী সরকার (৫৪)। সত্যেনবাবু পেশায় পান ব্যবসায়ী। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁদের। স্থানীয় সূত্রে খবর, মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর একরকম সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই দম্পতি। অবশেষে সংসার চালাতে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ঋণ নেওয়ার পর সেই টাকা কিছুতেই পরিশোধ করতে পারছিলেন না। সুদ-ও দিতে পারেননি। এনিয়ে দম্পতি মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

আরো পড়ুন : সকাল থেকে বন্ধ একাধিক পেট্রল পাম্প, ধর্মঘটে চরম ভোগান্তি

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে কার্যত লকডাউনে আয়-উপায়ও একপ্রকার বন্ধ ছিল সত্যেনবাবুর। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না। এমতাবস্থায় ঋণ পরিশোধ করা এক রকম দায় হয়ে পড়েছিল। তাই আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি। এদিন সেই মানসিক অবসাদ থেকে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন তাঁরা।

সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে যায় কুশমণ্ডি ব্লকের মালিগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন বাদবিকর গ্রামে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কুশমণ্ডি থানার পুলিশ। এদিকে ওই দম্পতিকে কুশমণ্ডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্‍সকরা প্রাথমিক পরীক্ষার পর মৃত বলে ঘোষণা করেন দু’জনকে।

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে আত্মীয়দের দাবি, সংসার চালাতে ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ওই দম্পতি। সেই ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই দম্পতি। সেই কারণেই হয়ত এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেই প্রাথমিক অনুমান।

এক প্রতিবেশী জানান. “বিকেল চারটে নাগাদ খবর পাই সরকারবাবু বিষ খেয়েছেন। স্ত্রীও মারা গিয়েছেন। খবর পেয়ে ছুটে আসি। বাড়িতে দম্পতি ছাড়া আর কেউ ছিল না। কী কারণে এসব হল তা জানি না। তবে মনে হচ্ছে, ঋণের দায়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী।”

আরো পড়ুন : চাকরিতে বদলি নিয়ে অসন্তোষ! গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক

এদিকে কুশমণ্ডি থানার পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করার পাশাপাশি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কি তার তদন্ত শুরু করেছে কুশমণ্ডি থানার পুলিশ। গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দ্বীপ কুমার দাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন ওঁনারা। কিন্তু ইএমআই শোধ করতে পারেননি বলে জানা যাচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে সেখান থেকেই এই আত্মহত্যা। তবে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সূত্র: টিভি ৯

আরও পড়ুন ::

Back to top button