হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা করল স্বামী
বাংলাদেশের নড়াইলের কালিয়ায় বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উড়শি গ্রামের স্বামী রকিবুলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী দিপালী উপজেলার চাচুড়ী গ্রামের আবুবক্কার শেখের মেয়ে এবং উড়শী গ্রামের মো. রকিবুল গাজীর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই বছর আগে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের উড়শী গ্রামের লতিফ গাজীর ছেলে রকিবুলের সঙ্গে দিপালীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে এই প্রথম দিপালী সন্তানসম্ভাবা হয়েছিলেন। এরই মধ্যে বারইপাড়া মোড়ের উজ্জলের হার্ডওয়্যারের দোকান ও আলিমের মুদি দোকানে প্রায় এক মাস আগে চুরি সংঘটিত হয়।
আরো পড়ুন : সত্ বাবার লালসার শিকার মেয়ে, স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সত্ কন্যাকে ধর্ষণ সত্ বাবার
ওই ঘটনায় রকিবুল গাজীকে সন্দেহ করে। প্রায় পনেরো দিন আগে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনির নেতৃত্বে তার ব্যক্তিগত অফিসে এ চুরির বিষয়ে সালিশ অনুষ্ঠত হয়।
সালিশে রকিবুল গাজীকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হলে সেই জরিমানার টাকা স্ত্রীর বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য স্ত্রী দিপালী বেগমকে চাপ দেয় স্বামী রকিবুল। এরই মধ্যে দিপালী বেগম তার কিছু স্বর্ণালংকার বিক্রি করা টাকা নিজের কাছে রাখেন।
ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে রাকিবুল অলংকার বিক্রির টাকা কেড়ে নিতে চাইলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। দিপালী স্বামীকে ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী রকিবুল হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রীর মাথায় সজোরে আঘাত করে। তখন সে গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নেওয়ার পথেই দিপালীর মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন : গল্পে মশগুল নার্স, এক ব্যক্তিকে দিয়ে ফেললেন কোভিড ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ
পুরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি সালিশ বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুটি দোকান চুরির ঘটনায় রকিবুল ধরা পড়ে। পরে তার বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সালিশদারদের সর্বসম্মতিতে রকিবুলকে জরিমানা ধার্য করা হয়। তবে রকিবুল সালিশ মেনে নেয়নি। এর আগেও সে একাধিক বিয়ে করেছে। পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
কালিয়া থানার ওসি সেখ কনি মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক স্বামী রকিবুলকে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।