নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার পরও মুম্বইকে মহিলাদের জন্য ‘নিরাপদতম শহর’ তকমা শিবসেনার
গত শুক্রবার ভোরে মুম্বইয়ের সাকিনাকা (Sakinaka) অঞ্চলে এক মহিলাকে ধর্ষণের পরে বীভত্স অত্যাচার করা হয়। পরে ওই মহিলা হাসপাতালে মারা যান। ওই ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে দেশ জুড়ে। সোমবার শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-য় দাবি করা হল, মুম্বই মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ শহর। তা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ থাকা উচিত নয়। সাকিনাকার ঘটনা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘এর ফলে মুম্বইয়ের বদনাম হয়েছে। তাই মানুষের ক্রোধ ন্যায়সঙ্গত।’
‘সামনা’-র সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, সাকিনাকায় ধর্ষণ ও খুনের জন্য কোনও বিকৃতমনস্ক ব্যক্তি দায়ী। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই ওই ধরনের বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন মানুষের দেখা পাওয়া যেতে পারে। মুম্বইয়ের ঘটনার সঙ্গে হাথরাস কাণ্ডের কোনও মিল নেই। গতবছর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ‘সামনা’-র বক্তব্য, ওই ঘটনায় অপরাধীদের রাজ্য সরকার সমর্থন করেছিল।
আরও পড়ুন : নেই কোনো অ্যাম্বুল্যান্স, রোগীকে খাটিয়ায় চাপিয়ে ১২ কিমি হেঁটে হাসপাতালে পরিবার
প্রমাণ লোপাটের জন্য ধর্ষিতার মৃতদেহ দ্রুত পুড়িয়ে ফেলা হয়। যোগী সরকার দাবি করেছিল, হাথরাসে ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেনি। পরে ওই দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। শিবসেনার দাবি, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মীরা একসময় কাশ্মীরের কাঠুয়ায় নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্তকে বাঁচানোর জন্য পথে নেমেছিল। কিন্তু সাকিনাকার ঘটনায় পুলিশ ১০ মিনিটের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, মৃতার দুই সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া হবে। এতে কি প্রমাণ হয় না যে, সরকার সংবেদনশীল? সাকিনাকায় যে মহিলা ধর্ষিত হয়েছিলেন, তিনি গত শনিবার মারা যান। একটি পার্ক করে রাখা টেম্পোয় তুলে তাঁকে ধর্ষণ করে তার চালক। কয়েকটি সূত্রের দাবি, টেম্পোচালক মহিলার পরিচিত। কিন্তু যা-ই হোক, ধর্ষণকারী টেম্পোচালক যে নৃশংসতার ছাপ রেখে গিয়েছে অপরাধে, সচরাচর তার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন : স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া,৩ সন্তানকে নিয়ে খালে ঝাঁপ বধূর, তারপর.
সে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে ধারালো রড জাতীয় কোনও বস্তু এত জোরে ঢুকিয়েছিল যে, সেটি গোপনাঙ্গ ছিন্নভিন্ন করে মহিলার তলপেটের ভিতরে চলে গিয়েছিল! বিশেষজ্ঞদের একজন জানিয়েছেন, আঘাতজনিত জটিলতার ফলে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এহেন নারকীয় নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে মহারাষ্ট্র সরকারের ওপর জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশন চাপ দিচ্ছে, যাতে এই মামলায় বাড়তি ধারা যোগ করা হয়।
সেইমতো রবিবার পুলিশ তফসিলি জাতি ও উপজাতি নির্যাতন রোধ আইনের ধারা মামলায় যোগ করেছে। কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার বলেছেন, এর ফলে নির্যাতিতার পরিবার অবিলম্বে ৪.২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ পাবে। আমরা পুলিশ ও রাজ্য সমাজ কল্যাণ দপ্তরের সদস্যদের উপস্থিতিতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিলেও নির্যাতিতার পরিবার সম পরিমাণ অর্থের ক্ষতিপূরণ পাবে বলে জানান তিনি।
সুত্র :দ্য ওয়াল