বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব (Biplab Dev)। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর এক ভাষণের ক্লিপ ভাইরাল হয়। শনিবার ওই ভাষণে বিপ্লব মন্তব্য করেন, ‘আমিই হলাম বাঘ। কোর্ট নয়।’ তিনি ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিসের অফিসারদের সামনে ওই বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, অফিসারদের সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করতে হবে। আগের সরকার মানুষের স্বার্থের দিকে নজর দিত না। যদি মানুষের স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে আদালত অবমাননা হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী ব্যাপারটা সামলাবেন।
বিপ্লব দেবের কথায়, ‘অনেক অফিসার আমাকে বলেন, তাঁরা আদালত অবমাননার ভয়ে একটি কাজ করতে পারছেন না। কোর্ট রায় দেবে। কিন্তু পুলিশকে তো সেই রায় কাজে পরিণত করতে হবে। পুলিশ আমার অধীনে আছে। পুলিশের নানা পদ্ধতি আছে। সেসব আমি দেখব।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব বিপ্লব দেব রেখেছেন নিজের হাতে। তিনি বলেন, ‘অফিসাররা কোর্টকে বাঘের মতো ভয় করেন। কিন্তু এখানে আমিই বাঘ। আমি জনতার রায়ে নির্বাচিত হয়েছি।
মানুষের রায়ে সরকার তৈরি হয়েছে। কোর্টের রায়ে নয়।’ এর মধ্যে ত্রিপুরা বিজেপিতে ভাঙন ঠেকাতে তত্পর হয়েছে দলের আইটি সেল। তারা ধারাবাহিক ক্যাম্পেন শুরু করেছে। ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রচার। তাতে বলা হচ্ছে, অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসছে? জানতে চাওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর? খুব সাবধান। খবরদার এইরকম ফোন এলে বেশি কথা বলবেন না। ওরা কিন্তু ভয়ঙ্কর! ওরা কারা? ত্রিপুরা বিজেপির বক্তব্য, ওরা আইপ্যাক।
প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। ওরা ফোন করে তথ্য জানতে চাইছে। ত্রিপুরায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত শুরু এই আইপ্যাক নিয়েই। গত মাসে ২৩ জন আইপ্যাক কর্মীকে হোটেলবন্দি করে রাখা, কোভিড বিধি ভাঙার জন্য মহামারী আইনে মামলা দায়ের করা, তা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগরতলা ছুটে যাওয়া -এসব নিয়েই ত্রিপুরার মাটিতে পা জমাতে শুরু করে তৃণমূল। বিজেপি মনে করছে, ওই ঘটনার পর থেকে আইপ্যাক অন্য পন্থা নিয়েছে। আর লোক পাঠাচ্ছে না। তবে ফোন নম্বর জোগার করে তারা ‘গ্রাউন্ড সার্ভে’ করতে চাইছে।
আরও পড়ুন : বাবুলের পর জল্পনায় এ বার লকেট, কুণালের টুইট নিয়ে শুরু জোর আলোচনা
ত্রিপুরার মন বুঝতে চাইছে। যদিও ত্রিপুরার তৃণমূলের বক্তব্য, মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই এসব কথা বলছে বিজেপি। এমন কোনও ফোন দলের তরফে বা আইপ্যাকের তরফে করা হচ্ছে না। একদা ত্রিপুরা কংগ্রেসের নেতা সুবল ভৌমিক বলেছেন, আসলে বিজেপি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তাই এসব বানানো গল্প ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করিতে চাইছে।
যদিও বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, তাঁদের হাতে প্রমাণ রয়েছে। সিপাহিজলার এক বিজেপি কর্মীর কাছে ফোন যায়। তাঁকে সরকারি চাকরি, বিপ্লব দেবের সরকারের ভূমিকা, সিপিএম জমানা ও এই জমানার বিভিন্ন তুলনামূলক প্রশ্নের জবাব চাওয়া হয়। জানতে চাওয়া হয় তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রশ্নও। সেই ফোন কলের রেকর্ড দলের কাছে দেন ওই কর্মী। তারপরই এই প্রচারে নেমেছে ত্রিপুরা বিজেপি।
সূত্র: দ্য ওয়াল