দুর্গাপুজোয় হামলা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’, জানালেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে (Bangladesh) বিভিন্ন দুর্গাপুজোর মণ্ডপে হামলা চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ৪ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। রবিবার সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, আগে থেকে পরিকল্পনা করেই দুর্গাপুজোর মণ্ডপে আক্রমণ করা হয়েছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করাই এই হামলার উদ্দেশ্য। মন্ত্রীর কথায়, ‘মনে হচ্ছে, কোনও কায়েমি স্বার্থবাহী গোষ্ঠীর উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটেছে।’
ঢাকা ট্রিবিউন সংবাদপত্রে সাক্ষাত্কারে মন্ত্রী বলেছেন, ‘শুধু কুমিল্লা নয় একসময় রামু এবং নাসিরনগরেও সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছিল।’ মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, কুমিল্লায় ওই অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটল কেন? মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এসম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রমাণ পেলেই সকলকে জানাব। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।’ একইসঙ্গে মন্ত্রী দাবি করেন, শনিবার রাত থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার কোনও ঘটনা ঘটেনি। রবিবার ভারতীয় জনতা পার্টি দাবি করেছে, বাংলাদেশে নিয়মিত সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন : দশমীতেও বাংলাদেশের মন্দিরে চলল তাণ্ডবলীলা, বেধড়ক মার ভক্তদেরও
তাদের মতে, সেজন্যই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রয়োগ করা দরকার। সেই সঙ্গে তৈরি করতে হবে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী মুরাদ হাসান দাবি করেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান যে সংবিধান চালু করেছিলেন, তা ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশ ধর্মীয় মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য হতে পারে না বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের শিরায় শিরায় মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ত বইছে। যে কোনও মূল্যে ১৯৭২ এর সংবিধান ফেরাতে হবে। আমি পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবিত সংবিধানে ফিরে যাওয়ার দাবি করব।
আর কেউ না বলুক, মুরাদ একথা সংসদে বলবেই। মুজিবুরের কনিষ্ঠতম পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭ তম জন্মবার্ষিকীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মৌলবাদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান জানিয়ে মুরাদ বলেন, ইসলাম আমাদের রাষ্ট্রধর্ম বলে মনে করি না। আমরা ১৯৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্লামেন্টে ওই বিল কার্যকর করব। স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রবর্তন করা ১৯৭২ সালের সংবিধানে শীঘ্রই ফিরে যাব আমরা।
এই বাংলাদেশ এক অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে প্রত্যেকে তাঁর নিজের ধর্ম পালন করবে। সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করায় প্রয়াত সামরিক শাসকদ্বয় হুসেন মহম্মদ এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের তীব্র সমালোচনা করে ধর্মের নাম দেশে বিভাজন ঘটানো, হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ায় মুরাদ কাঠগড়ায় তোলেন বিএনপি-জামাত জোটকেও।
সূত্র: দ্য ওয়াল