নিয়মিত দিতে হবে হাজিরা, ছাড়তে পারবেন না মুম্বই, মোট ১৪ শর্তে জামিন আরিয়ানের
বৃহস্পতিবার বম্বে হাইকোর্ট (High Court) জামিন দিয়েছে শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ানকে। মাদক মামলায় অভিযুক্ত আরিয়ানকে হাইকোর্ট বলেছে, পুলিশকে না জানিয়ে তিনি মুম্বইয়ের বাইরে যেতে পারবেন না। প্রতি শুক্রবার তাঁকে নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র অফিসে হাজিরা দিতে হবে। তাঁকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। জামানত হিসাবে দিতে হবে ১ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে ১৪ টি শর্তে জামিন দেওয়া হয়েছে শাহরুখ-পুত্রকে। হাইকোর্ট বলেছে, বিনা অনুমতিতে আরিয়ান দেশ ছাড়তে পারবেন না।
জামিনে মুক্ত থাকা অবস্থায় তিনি মাদক সেবন করতে পারবেন না। তাঁর সহ অভিযুক্ত আরবাজ মার্চেন্টের সঙ্গে যোগযোগ করতে পারবেন না। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেল থেকে বেরোতে পারেন আরিয়ান। তাঁর রিলিজ অর্ডার ইস্যু করবে বিশেষ অ্যান্টি নারকোটিকস আদালত। সেই কোর্টের নির্দেশ যদি বিকাল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে জেলে পৌঁছায় তবেই এদিন শাহরুখ পুত্র মুক্তি পাবেন। না হলে শুক্রবার রাতও তাঁকে জেলেই কাটাতে হবে। আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানেসিন্ধে বলেন, ‘আমরা জামানতের টাকা নিয়ে তৈরি।
আশা করছি এদিনের মধ্যেই রিলিজ অর্ডার এসে যাবে।’ আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে মামলায় তদন্তকারী অফিসারের সম্পর্কে আগেই একটি গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। তিনি বলেছিলেন, তদন্তকারী অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে জন্মসূত্রে মুসলমান। কিন্তু জালিয়াতি করে হিন্দু পরিচয় দিয়ে তিনি কাস্ট সার্টিফিকেট জোগাড় করেন। তার জোরেই তিনি ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসে চাকরি পেয়েছিলেন। ওয়াংখেড়ে অবশ্য দাবি করেন, তিনি হিন্দু।
আরও পড়ুন : শাহরুখপুত্রের জামিনের পর যা বললেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী
কিন্তু নবাব মালিক টুইটারে ওয়াংখেড়ের ‘নিকাহ নামা’-র ছবি পোস্ট করেছেন। অর্থাত্ তিনি দেখাতে চেয়েছেন, মুসলমান মতেই ওয়াংখেড়ের বিবাহ হয়েছিল। সুতরাং তিনি মুসলমান। এর আগে নবাব মালিক একটি বার্থ সার্টিফিকেট পোস্ট করে দাবি করেন, সেটি সমীর ওয়াংখেড়ের। বার্থ সার্টিফিকেটে শিশুর বাবার নাম হিসাবে লেখা আছে দাউদ কে ওয়াংখেড়ে। নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর ওয়েবসাইটে লেখা আছে, সমীরের বাবার নাম ধ্যানদেব ওয়াংখেড়ে।
নবাব মালিক টুইট করে বলেছেন, সমীরের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তিনি প্রমাণ করতে চাইছেন, ওই তদন্তকারী অফিসার জালিয়াত। মন্ত্রীর দাবি, ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সমীরের বিবাহ হয়। তাঁর বোনের স্বামী আজিজ খান ছিলেন বিয়ের সাক্ষী। এর আগে ওয়াংখেড়ের স্ত্রী ক্রান্তি রেদকার ওয়াংখেড়ে মন্ত্রীর দাবি খারিজ করে বলেন, আমি ও আমার স্বামী সমীর দুজনেই জন্মসূত্রে হিন্দু ।
আমরা অন্য কোনও ধর্মই গ্রহণ করিনি কখনও। সব ধর্মের প্রতিই শ্রদ্ধা আছে। সমীরের বাবাও ছিলেন হিন্দু। তিনি আমার মুসলিম শাশুড়ি মাকে বিয়ে করেন। শাশুড়ি মা আর নেই। সমীরের আগের বিয়েটা হয়েছিল বিশেষ বিবাহ আইনে। ২০১৬-য় তাঁদের ডিভোর্স হয়। ২০১৭য় আমাদের বিয়ে হয় হিন্দু বিবাহ আইনে।
প্রেস বিবৃতি দিয়ে সমীর ওয়াংখেড়েও বলেন, আমি বহু ধর্মে বিশ্বাসী, ধর্মনিরপেক্ষ পরিবারের ছেলে। বাবা হিন্দু, মা মুসলিম। টুইটারে আমার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ অবমাননাকর, আমার পারিবারিক গোপনীয়তায় আগ্রাসন। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের কুত্সামূলক প্রচারে ব্যথিত।
সুত্র : দ্য ওয়াল