আফগানিস্তানে বিপর্যস্ত হওয়ার মুখে ব্যাঙ্ক পরিকাঠামো
চলতি বছরের অগাস্ট মাসেই আসরফ গণি সরকারের পতন ঘটিয়ে কাবুলের মসনদে অধিষ্ঠিত হয়েছে তালিবান। সরকারে আসার পর আন্তর্জাতিক স্তর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আফগানিস্তানের নামে জমা থাকা অর্থ ব্যবহারের ওপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
আমেরিকার চাপের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। তারপর থেকেই সরকার চালাতে চরম অর্থ কষ্টের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তালিবানকে। এই বিপুল সমস্যার মধ্যে তালিবান সরকারে জন্য আরও একটি খারাপ খবর।
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, তালিবান শাসনে আফগানিস্তানে ভেঙে পড়তে পারে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক ব্যবস্থা। ইউনাইটেড নেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে আফগানিস্তান ব্যাঙ্ক ও আর্থিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার মুখে। রিপোর্টে বলা হয়েছে “আফগানিস্তানের সীমিত উত্পাদন ক্ষমতা উন্নত করতে এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে ভেঙে পড়ার হাত থেকে রক্ষ করতে ব্যাঙ্ক চালনার ক্ষেত্রে সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।”
কাবুলের শাসনভার তালিবানের হাতে যাওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বরাদ্দ অর্থের ওপর দাঁড়ি টেনেছিল আমেরিকা। তারপরেই বিপুল সমস্যার মুখোমুখি পড়েন তালিব শাসকরা। দ্রুত সমস্যা সমাধানের কথা বললেও এখনও অবধি সেইসব সমস্যা সমাধানের পথে অগ্রসর হতে পারেনি নয়া শাসকরা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় ফেরিডুবি, শিশুসহ ৬ জনের প্রাণহানি
জানা গিয়েছে, বর্তমানে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আমানতের চাহিদা মেটাতে পারেনি। শাসনভার হাতে তুলেন নেওয়ার পর থেকেই সপ্তাহে ২০০ সর্বোচ্চ ২০০ মার্কিন ডলার ব্যাঙ্ক থেকে তোলার বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল তালিবান। এরফলে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে টাকা তোলার উর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে সপ্তাহে ৪০০ মার্কিন ডলার করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা টাকা জমা দেওয়ার পরিমাণ ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে কমে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ইউএনডিপির সদস্য আবদুল্লাহ আল দারদারি বলেন, “ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ছাড়া আফগানিস্তানে মানবাধিকার গত কোনও সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।”
দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার পতন রোধ করার জন্য, ইউএনডিপি তাত্ক্ষণিক এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। সম্প্রতি দেশের আর্থিক সমস্যা সমাধানে বিদেশি মুদ্রা (Foreign currency) ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালিবান। জানা গিয়েছিল, আফগানি টাকার পাশাপাশি সেদেশে বিপুলভাবে লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার ব্যবহারে চল ছিল।
বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার করলে শাস্তির নিদান দিয়েছিল তালিবান। কিন্তু সাম্প্রতিক অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে তালিবানের দেওয়া ওই দাওয়াইয়ে কোনও কাজ হয়নি। আগামী দিনে আফগানিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
সুত্র: টিভি ৯ বাংলা