কলকাতা

পরকীয়া লুকোতে প্রেমিককে দিয়ে ভাসুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করাল যুবতী

Bansdroni murder case : পরকীয়া লুকোতে প্রেমিককে দিয়ে ভাসুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করাল যুবতী - West Bengal News 24

বাঁশদ্রোণী (Bansdroni murder case) হত্যাকাণ্ডে উঠে এল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ঘটনা ৷ পরকীয়া লুকোনোর জন্য এক মহিলা তাঁর প্রেমিককে দিয়ে ভাসুরকে খুন করিয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে সাহেবগঞ্জ এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার (Bihar man arrested) করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (Kolkata police )। ধৃতের নাম রাজীব কুমার । বাড়ি বিহারে । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে যে, মৃত মুকেশ কুমারের ভাইয়ের স্ত্রী ললিতার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে রাজীবের ৷ মুকেশ তা জেনে যাওয়ায় রাজীব ও ললিতা তাকে খুনের ষড়যন্ত্র করে ৷ ললিতাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷

গত ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ বাঁশদ্রোণী (Bansdroni murder news) থানা এলাকার সোনালি পার্কে একটি বাড়ির নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় বাড়ির মালিক মুকেশ সাউয়ের দেহ । তদন্তকারীরা দেহটি দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন । মুকেশ সাউয়ের গলায় এবং কাঁধে ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল । পাশাপাশি তাঁর বাঁ হাতে ধরা ছিল একটি ধারালো ছুরি ।

রক্তাক্ত দেহটি প্রাথমিক ভাবে দেখে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা অনুমান করেন, এটি স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা বা আত্মহত্যার ঘটনা নয় । এর কারণ যে ব্যক্তি আত্মঘাতী হচ্ছেন, তাঁর পক্ষে নিজের শরীরে এত জায়গায় আঘাত করে আত্মহত্যা করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার । এরপর এই দেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে ।

আরও পড়ুন : রাতারাতি কোটিপতি অ্যাম্বুলেন্স চালক

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানতে পারে এটি একটি খুনের ঘটনা । এর পরেই মৃতের ভাইকে বাঁশদ্রোণী থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । এরপর রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই রহস্যের উন্মোচন হয় ৷

তদন্তে উঠে আসে সম্পর্কের টানাপোড়েনের দিক । জানা গিয়েছে, মৃত মুকেশ কুমার সাউয়ের ভাই সঞ্জয় কুমার সাউয়ের স্ত্রীর সঙ্গে ধৃত রাজীব কুমারের একটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল । সম্প্রতি সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান মুকেশ কুমার। জেরায় রাজীব কুমার গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে তার যে সম্পর্ক ছিল, তা জানতে পেরে যায় মৃত মুকেশ কুমার ৷ সে নাকি এই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ললিতাকে ব্ল্যাকমেইলও করত ।

তাদের সম্পর্কের কথা যাতে জানাজানি না হয়ে যায়, সে জন্যই ললিতা ও তার প্রেমিক রাজীব মুকেশ কুমারকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে। জেরায় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ঘটনার দিন ঘরের পিছনের দরজা খুলে দেয় ললিতা। সেই দরজা দিয়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে রাজীব। ঘটনার দিন মুকেশ কুমারের স্ত্রী এবং সন্তান বিহারে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ৷ তাই বাড়িতে একা ছিলেন মুকেশ কুমার ৷ সেই কারণে খুনের জন্য সেই দিনটিকেই বেছে নেয় রাজীব এবং ললিতা।

ঘরে ঢুকে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে মুকেশ কুমারকে কুপিয়ে খুন করে রাজীব । যাতে সন্দেহ তাদের দিকে না আসে, সে জন্য মৃত মুকেশ কুমারের ডান হাতে ওই ধারালো ছুরি দিয়ে তা এমন ভাবে রেখে দেওয়া হয়েছিল, যাতে গোটা ঘটনাটি আত্মহত্যার বলে মনে হয় পুলিশের ৷ ইতিমধ্যেই ললিতা এবং রাজীবকে গ্রেফতার করে এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ।

সূত্র : ইটিভি ভারত

আরও পড়ুন ::

Back to top button