বিচিত্রতা

‘কুমারী পাত্রী’ থেকে ‘নিরামিষাশী পাত্র’-এর খোঁজ! অবাক-করা যত বিয়ের বিজ্ঞাপন

‘কুমারী পাত্রী’ থেকে ‘নিরামিষাশী পাত্র’-এর খোঁজ! অবাক-করা যত বিয়ের বিজ্ঞাপন - West Bengal News 24

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘ব্যোমকেশ অমনিবাস’-এ এক গল্পের মধ্যে অজিত সত্যান্বেষীকে জিজ্ঞেস করেছিল, খবরের কাগজে সে সবার আগে কী পড়ে? প্রশ্নের উত্তরে ব্যোমকেশ জানিয়েছিল, কাগজের বিজ্ঞাপনের মধ্যেই যত রহস্য লুকিয়ে।

ব্যোমকেশের কথা মতো, এমন কিছু রহস্যময় এবং বিচিত্র বিজ্ঞাপনের সন্ধান ইদানিংকালে পাওয়া গিয়েছে। যা ছড়িয়ে পড়েছে নেট মাধ্যমে। এবং প্রতিটা বিজ্ঞাপনই পাত্র-পাত্রীর খোঁজের।

পাত্র বা পাত্রী, তাঁরা কি পণ্য? বিয়ের বিজ্ঞাপন থেকে পাকা দেখা পর্যন্ত, যে লম্বা প্রক্রিয়া চলে, এবং প্রতিটা মুহূর্তে যেভাবে দাঁড়িপাল্লায় মাপার মতো সবটা খুটিয়ে খুটিয়ে পরীক্ষা করা হয়, তাতে আদৌ কি পাত্র বা পাত্রীর সঠিক সম্মান বজায় থাকে! এই ধরনের প্রশ্ন হাজার বার উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবং প্রতিটা প্রশ্নই জেগেছে বিয়ের বিচিত্র বিজ্ঞাপন থেকে।

সাধারণত কী লেখা থাকে তাতে! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উল্লেখ করা হয় ফর্সা, স্লিম, সুন্দরী ও গৃহকর্মে নিপুণা পাত্রীর চাহিদা এবং পাত্রের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি এবং প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হতে হবে। সাম্প্রতিককালে আরও কিছু অবাক-করা বিয়ের বিজ্ঞাপন নেট মাধ্যমে তুমুলভাবে ভাইরাল হয়েছে। যার পর বিজ্ঞাপনদাতার মানসিকতা নিয়েই রীতিমতো সরব হয়েছেন একাংশের নেট নাগরিক।

আরও পড়ুন : বিয়ের মণ্ডপে স্বামী-স্ত্রীর ‘গুলি’ উৎসব, মামলার প্রস্তুতি

কয়েকদিন আগেই একটি বিয়ের বিজ্ঞাপনে পাত্রীর স্তন থেকে কোমরের মাপ নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও লেখা রয়েছে, পাত্রীর হাত ও পা সবসময় মেনিকিওর, পেডিকিওর করে পরিষ্কার রাখতে হবে। কখন কী ধরনের পোশাক পরতে পারবেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে। পাত্রীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২৬-এর মধ্যে। এই বিজ্ঞাপন দেখে তো চোখ ছানাবড়া অনেকের।

এর আগেও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে বহু বিয়ের বিজ্ঞাপন ভাইরাল হয়েছে। একটি বিজ্ঞাপনে একজন উল্লেখ করেছিলেন, সুন্দরী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, ভাল রাঁধুনি পাত্রী চাই, তবে তিনি যেন নারীবাদী না হন। আবার একজন লিখেছিলেন, পাত্রীর ফেসবুকে আসক্তি থাকা চলবে না। ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থাকলে সেই বিজ্ঞাপনে যেন যোগাযোগ না করা হয়! আবার স্ত্রী, সন্তান থাকা সত্ত্বেও এক ব্যক্তি বিয়ের বিজ্ঞাপনে লিখেছিলেন, ‘সুন্দরী, ভাল উচ্চতার, এবং অবশ্যই কুমারী পাত্রী চাই।’

এ তো গেল পাত্রীর বিজ্ঞাপন। বিয়ের বিজ্ঞাপনে এক পাত্রীর পরিবারের তরফে লেখা হয়েছিল, আইএএস, আইপিএস, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি সব রকমের পাত্রই চলবে, শুধু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা যোগাযোগ করবেন না। কোনও একটি পত্রিকায় ‘পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপনে এক পাত্রীর চাহিদা ছিল, একমাত্র সঠিক সংবাদ পরিবেশন করা হয় বলে ওই পত্রিকাই যদি কেউ শুধুমাত্র পড়েন, তাহলেই বিয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন। আমিষ খেতে ভালবাসেন এমন এক পাত্রী বিজ্ঞাপনে লিখেছিলেন, নিরামিষাশী পাত্র একেবারেই চলবে না। চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে এই বিজ্ঞাপনগুলো উঠে এলেও, আদৌ সেই বিজ্ঞাপনে কেউ সাড়া দিয়েছিলেন কি না এবং তার পরিণতি শেষপর্যন্ত অবশ্য জানা যায়নি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button