ঝাড়গ্রাম

করোনার বাড় বাড়ন্ত, মন ভাল নেই মকর পরবে

স্বপ্নীল মজুমদার

করোনার বাড় বাড়ন্ত, মন ভাল নেই মকর পরবে - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে জঙ্গলমহলের মূলবাসীদের প্রধান উৎসব ‘মকর পরব’। পৌষ সংক্রান্তির আগের রাতে ঘরে-ঘরে টুসু পুজো দিয়ে পরবের সূচনা হয়। টুসু পুজোর রাতে হয় গুড়-নারকেলের পুর ভরা ‘ডুমু পিঠা’, দুধের ‘পুলি পিঠা’, হাঁস ও মুরগি মাংসের ‘মাঁস পিঠা’।

শুক্রবার পৌষ সংক্রান্তির সকালে হবে টুসু ভাসান। তারপরে স্নান সেরে নতুন পোশাক পরে জঙ্গলমহলবাসী মেতে উঠবেন উৎসবে। ঘরে ঘরে পিঠের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে এই সময়ে। শনিবার পয়লা মাঘ ‘আখ্যান যাত্রা’র দিনে কুড়মি কৃষি বর্ষের সূচনা হয়। ওই দিন গ্রামে গ্রামে গ্রামদেবতা গরামের পুজো হয়। সব মিলিয়ে এই সময়টা উৎসবের মেজাজে থাকে জঙ্গলমহল। তবে করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলায় এবার কিছুটা তাল কেটেছে উৎসবে।

বৃহস্পতিবার ছিল ঝাড়গ্রাম বাজারে সাপ্তাহিক হাটের দিন। তাই টুসু মূর্তির পসরা নিয়ে বসেছিলেন কারিগরেরা। টুসু কেনার পাশাপাশি, নতুন কুলো, ঝুড়ি, মাটির হাঁড়ি-মালসা কেনার ধুম পড়েছিল বাজারে। বিনপুরের দহিজুড়ি অঞ্চলের কেন্দডাংরি গ্রামের ৩০টি পরিবার টুসু মূর্তি তৈরি করেন। ধানের তূষ মেশানো মাটি দিয়ে তৈরি টুসু মূর্তি রঙ করে সাজিয়ে তোলা হয় রঙিন কাগজ, রাংতা আর শোলার সাজে।

করোনার বাড় বাড়ন্ত, মন ভাল নেই মকর পরবে - West Bengal News 24

এদিন ২০ টাকা, ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দেড়শো-দু’শো টাকা দামে বিভিন্ন মাপের টুসু মূর্তি বিক্রি হয়েছে। কেন্দডাংরির এক শিল্পী জানালেন, ৭০টি মূর্তি এনেছিলেন এদিন। দুপুরের মধ্যে ২০টি বিক্রি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আগে মুহূর্তে সব মূর্তি বিক্রি হয়ে যেত। এবার করোনার কারণে হয়ত কম লোকজন এসেছেন। এলাকার গ্রামেগঞ্জেও অনেকে মূর্তি বিক্রি করছেন। তাই শহরের হাটে এখন সেভাবে ভিড় হয় না।

বিনপুরের প্রাক্তন বিধায়ক চুনিবালা হাঁসদা জানালেন, ‘‘কাঁচা শালপাতা ছাড়া মাংস পিঠে তৈরি করা যায় না। এক বাণ্ডিলে থাকে কুড়িটা গোলপাতা। তাতে দশটা মাঁস পিঠে তৈরি করা যায়।’’ পিঠে তৈরি করা হয় মাটির হাঁড়ি-মালসায় তাই হাঁড়ি-মালসার হাটুরেদের কাছেও ভিড় হয়েছিল। চুনিবালার বড় মেয়ে বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাই মায়ের মনে আনন্দ। মাংস পিঠের সুঘ্রাণ ছড়িয়েছে জেলার গ্রামে গঞ্জে।

করোনার বাড়ন্তে বাসিন্দাদের মনে আনন্দ নেই। তবুও সাধ্যমতো আয়োজন করে সবাই আনন্দ করছেন। পরব তো বছরে একবারই আসে!

আরও পড়ুন ::

Back to top button