উত্তরপ্রদেশে বিশেষ ছকে পিচ তৈরি মোদী-যোগী জুটির!
ভারতীয় রাজনীতিতে ‘ফ্রি’-এর অঙ্ক কষে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা কম বেশি সব রাজনৈতিক দলই করে থাকে। দক্ষিণী রাজ্যে খুল্লাম খুল্লা টিভি, ফ্রিজ দিয়ে ভোট ‘কেনা’র চেষ্টা বহুবার দেখেছে ভারত। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের জেরে সেই সব ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
এই কারণেই ‘ফ্রি’-এর নীতি এখন থাকে সরকারি প্রকল্পের মোড়কে। উত্তরপ্রদেশেও এই ‘ফ্রি’-এর রাজনীতি চলে আসছে বহু বছর ধরে। যেই রাজ্যে ভোট হয় জাতপাতের অঙ্কে, সেখানেও ‘ফ্রি’-এর লোভ দেখিয়ে অন্য দলের ‘ভোট ব্যাঙ্কে’ থাবা বসানোর ছক কষতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলগুলিকে।
উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারও পিছিয়ে থাকেনি জনগণের হাতে ‘ফ্রি’-এর জিনিস তুলে দিতে। তা সে পড়ুয়াদের ট্যাব হোক, গরিব পরিবরকে রেশন। এরকমই একাধিক ‘ফ্রি’-এর স্বপ্ন দেখিয়ে নির্বাচনী ইস্তেহারও প্রকাশ করেছে গেরুয়া শিবির।
তবে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি কি কাজে দেয়?কোভিড আবহে বিগত দিনে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার অধীনে উত্তরপ্রদেশের ১৫ কোটি মানুষ বিমানূল্যে রেশন পেয়েছেন।
তাছাড়াও একাধিক প্রকল্পের আওতায় কম সুদে ঋণ পেয়েছেন সেরাজ্যের যুব সমাজ, মহিলা, ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকরা। পাশাপাশি বেশ কিছু স্বাস্থ্য প্রকল্পও চালু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে। এই সবই জনসাধারণের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে চালু করা প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ‘পড়ুয়াদের বিক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে গ্রেফতার ইউটিউবার ‘হিন্দুস্তানি ভাউ’
তবে এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে সূক্ষ্ম ভোট সমীকরণও।ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকেই অন্ত্যোদয়া কার্ড হোল্ডাররা ‘দ্বিগুণ’ রেশন পাচ্ছেন। একবার রাজ্য সরকারের তরফে পরিবার পিছু ৩৫ কেজি করে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে অন্ত্যোদয়া কার্ড হোল্ডারদের। আবার কেন্দ্রের তরফেও একই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।
অন্যদিকে ‘প্রায়োরটি’ রেশন কার্ড হোল্ডাররাও দুই দফায় কেন্দ্র ও রাজ্যের থেকে পাঁচ কেজি করে মোট ১০ কেজি খাদ্যশস্য পাচ্ছেন। তবে এই রেশন বিতরণের বিষয়টি মেনে নিতে পাচ্ছেন না অনেক বিজেপি নেতাই।
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা প্রয়াগরাজ জেলার ধারাওঁ গজপত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিদ্যাকান্ত শুক্লা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘এভাবে বিনামূল্যে দিতে থাকলে মানুষজনের অভ্যাস খারাপ হয়ে যাবে।’
এদিকে শুধু বিনামূল্য রেশন নয়, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অধীনে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের। কৃষকের অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ঢুকছে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার আওতায়।
আবার ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে নিবন্ধিত দোকানদার, দৈনিক মজুরি, ই-রিক্সা চালক, নাপিত এবং নৌকাওয়ালাদের ভরণপোষণ ভাতা হিসাবে ১০০০ টাকা করে দিচ্ছে সরকার।