বিচিত্রতা

মাটি খুঁড়লেই হিরা, গল্প নয় সত্যি

মাটি খুঁড়লেই হিরা, গল্প নয় সত্যি - West Bengal News 24

শুধু খোঁড়াখুঁড়ির ঝামেলা পোহাতে পারলেই হলো। তারপর আপনিও পেয়ে যেতে পারেন অমূল্য রতন, দুই-একটি হিরার টুকরা! তবে তার আগে অবশ্যই অনলাইনে বা নিজে গিয়ে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে আরকানসাস স্টেট পার্কে। অনেকের কাছে যা ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক নামেও পরিচিত। আমেরিকার ওই পার্কে একরের পর একর জুড়ে মাটির নিচে রয়েছে রঙ-বেরঙের হিরা। গল্প নয়, খাঁটি। বস্তুত, এটিই দুনিয়ার একমাত্র হিরার খনি, যেখানে ঢুকতে কোনো সরকারি দরপত্র লাগে না। অর্থাৎ, আমজনতার জন্য এর দ্বার অবারিত। এই পার্কে প্রতিদিন গড়ে দু’টি করে হিরার খোঁজ মেলে। ফলে সেখানে আমজনতার ভিড় লেগেই রয়েছে।

আরকানসাসের পাইক কাউন্টিতে মারফ্রিজবোরো শহরে প্রায় ৯১১ একর ধরে গড়ে উঠেছে ওই হিরের পার্ক। তার মধ্যে সাড়ে ৩৭ একর জুড়ে রয়েছে ‘হিরার খনি’।

খনি বলতে সাধারণত যে ছবি ভেসে আসে, এটি অবশ্য তা নয়। প্রাকৃতিকভাবে একটি পাইপের আকারে গর্ত তৈরি হয়েছিল ওই পার্কে। প্রায় সাড়ে ৯ কোটি বছরের ক্ষয়িষ্ণু আগ্নেয়গিরির অংশ হলো ওই পাইপটি। বারবার অগ্ন্যুৎপাতের কারণে যা পাইপের আকারে গর্তের চেহারা নিয়েছে।

আরও পড়ুন :: যেভাবে রাতারাতি মডেল হলেন ৬০ বছরের দিনমজুর!

হিরার খনি ঘিরে এ বার প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছিল। রস্কো জনস্টন নামে এক ব্যবসায়ী ওই জমির উপরে ‘আরকানসাস ডায়মন্ড মাইন’ খুলে বসেন। রেষারেষিতে দুই গোষ্ঠীরই লোকসান হয়েছিল। আসরে নেমেছিল টেক্সাসের সংস্থাও। ’৭১-এর জুলাইতে ওই সম্পত্তির মালিকানা নেয় ডালাসের জিই ইন্ডাস্ট্রিজ (জিএফআই)। এরপর থেকে বেশকিছু একর জমি বেচে দিয়েছিল ওই সংস্থা। তবে হিরার খনির আকর্ষণ কমেনি।

মারফ্রিজবোরো শহরের এই এলাকায় এর চেয়েও বড় হিরা অবশ্য আগেই খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। ১৯২৪ সালে তা খুঁজে পান ওয়েসলি ওলে বেশাম নামে এক শ্রমিক। ‘আঙ্কল স্যাম’ নামে পরিচিত ওই হিরার ওজন ছিল ৪০.২৩ ক্যারেটের (৮.০৪৬ গ্রাম)। আমেরিকায় এত বড় হিরা আর কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

টিকিট কেটে পার্কে ঢোকার পর নিজেদের যন্ত্রপাতি নিয়েই খোঁড়াখুঁড়ি করতে পারেন। অথবা চাইলে সেগুলো ভাড়াও নিতে পারেন। তবে ব্যাটারি বা মোটরচালিত যন্ত্র নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ।

জমি কেনার পর এর মান পরীক্ষা করিয়েছিলেন লিটল রক গোষ্ঠীর কর্ণধার স্যামুয়েল এফ রেবার্ন। তারপর থেকে বহুবার ওই জমিতে বাণিজ্যিকভাবে খননকাজ শুরু হলেও তা সফল হয়নি। যদিও ১৯০৭-৩২ সালের মধ্যে জমির উপরিস্তরে ক্ষয়ের পর প্রায়শই ৩০ ক্যারেট বা তার বেশি ওজনের হিরা পাওয়া যেত।

এই খনিতে ঢুকে হিরের খোঁজে খোঁড়াখুঁড়ি করতে পারেন যে কেউ। শর্ত একটাই— পার্কে ঢুকতে অনলাইনে বা সশরীরে টিকিট কাটতে হবে। সেই ব্যবস্থা তো বহু পার্কেই রয়েছে।

পার্কের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ১৯০৬ সালের অগস্টে তার ২৪৩ একর খামারবাড়ির জমিতে দু’টি অদ্ভুত দেখতে স্ফটিক খুঁজে পান হাডলসটন। পরের মাসে লিটল রক নামে এক বিনিয়োগকারী গোষ্ঠীর কাছে ওই ২৪৩ একরের একাংশ বেচে দেন হাডলসটন ও তার স্ত্রী সারা।

সূত্র: আনন্দবাজার

আরও পড়ুন ::

Back to top button