প্রযুক্তি

ভয়ংকর হয়ে উঠছে সামাজিক মাধ্যম, চড়া মূল্যে স্পর্শকাতর ছবি-ভিডিও বেচাকেনা

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

ভয়ংকর হয়ে উঠছে সামাজিক মাধ্যম, চড়া মূল্যে স্পর্শকাতর ছবি-ভিডিও বেচাকেনা - West Bengal News 24

সম্প্রতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে ছদ্মবেশী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো। চড়া মূল্যে স্পর্শকাতর ছবি-ভিডিও এমনটি জোরপূর্বক ধর্ষণের ভিডিও এসব সাইটের কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করছে ব্যবহারকারীরা। আর বাছ-বিচার না করেই এসব প্রকাশ করে দেয়া হচ্ছে ছদ্মবেশী মাধ্যমগুলোতে। আর এসব দেখার জন্যে হু হু করে বাড়ছে নতুন অ্যাকাউন্ট।

এগুলোর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওনলিফ্যানস ওয়েবসাইটটি যা নিজেকে পরিচয় দেয় প্রচলিত এবং জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। আদলে এটি প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইট। এটিতে অ্যাকাউন্ট খুলতে গুণতে হচ্ছে অর্থ। তাতে থেমে নেই এর নতুন সদস্য সংখ্যার হিড়িক। এটি ভিডিও বেচাকেনার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অর্থ আয়ের সুযোগও করে দেয়। কিন্তু এর বাইরে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটটি যা করছে, তা রীতিমতো ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক হয়ে ওঠেছে অনেকের জীবনে। ইতোমধ্যে পর্নো সাইট হিসেবে সর্বনাশ করছে অনেকের। আর এই সাইট ব্যবহার করে পর্নো তারকারা হয়ে উঠছেন আরও অর্থশালী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে এসব তথ্য। ওই ওয়েবসাইটটির অন্ধকার দিক খুঁজে দেখতে একটি তদন্ত করেছে। তাতে দেখা গেছে, ১২৮ জন মার্কিন নাগরিক পুলিশের কাছে সাইটটি নিয়ে অভিযোগ করেছে। তাদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই গত পাঁচ বছরে ওই সাইটে তাদের যৌনজীবনের বিষয়বস্তু–সংবলিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী এক নারী অভিযোগ করেছেন, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। সেই ভিডিও ওই ওয়েবসাইটে তুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিরা এর বিচার পান না। আইন সব সময় এসব ওয়েবসাইটকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন ২০২২ সালে এই সাইটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামিতে স্যামি (পুরো নাম প্রকাশ করা হয়নি) নামের ওই নারী সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় যুক্ত ছিলেন দুজন। স্যামি দুজনকে আটকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে স্যামি বলেন, ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। ঘটনার দুই মাস পর ৩০ জুন ওই ঘটনার সম্পাদনা করা ভিডিও মার্কিন ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ওই দুই ব্যক্তি অর্থের লোভে সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিও চিত্রের ভিন্ন নাম দিয়ে বিপণন করেন তারা।

ওই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন তারকা, ইনফ্লুয়েন্সারসহ বিনোদনজগতের বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে পর্ন ভিডিও বিক্রি হচ্ছে। এখান থেকে পর্নো তারকারা লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিচ্ছেন। ২০১৬ সালে এর যাত্রা শুরু পর থেকে ২৪ কোটি ব্যবহারকারীর বিশাল প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে এটি। অনেকে প্রাথমিক পর্যায়ে একে মূলধারার এবং প্রচলিত সাইট হিসেবে মনে করে অ্যাকাউন্ট খুলছেন এবং ভয়াবহভাবে প্রতারিত হচ্ছেন।

কারও জন্য এটি অর্থ আয়ের প্ল্যাটফর্ম হলেও অনেকের কাছে জন্য এটি যন্ত্রণা এবং প্রতারণার ফাঁদ হয়ে উঠেছে। অনুমতি ছাড়া অনেকের ভিডিও এখানে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। স্যামির মতোই কারও কারও ক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নের ভিডিও এখানে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে সম্মতিহীন এসব ভিডিও প্রকাশের ক্ষেত্রে নজরদারি করা কঠিন। কারণ, নিপীড়নের ক্ষেত্রে আইনি পথে হাঁটার জন্য তথ্যপ্রমাণ থাকে কম।

এদিকে, মার্কিন ওই ওয়েবসাইট নিজেদের ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’ হিসেবে দাবি করে থাকে। যদিও রয়টার্সের তদন্তে দেখা গেছে, মার্কিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এই সাইটের বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত চার বছরে ১২৮টি অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগকারীদের মধ্যে নারী–পুরুষ উভয়ই রয়েছেন। তাদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই শুধুমাত্র অর্থের লোভে তাদের ভিডিও-ছবি ওই সাইটে প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য