অবশেষে নামল বৃষ্টি। অসহনীয় গরম থেকে কিছুটা গলেও স্বস্তি পেলেন শহরবাসী। ভোর রাত থেকেই কলকাতা শহরে শুরু হয়েছে বর্ষণ। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। গতকালই আলিপুর আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল যে শুক্রবার থেকে বর্ষণ হবে শহরে। সেই মতোই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা সহ সংলগ্ন এলাকায়।
গতকয়েকদিন অসহনীয় গরমে নাজেহাল হয়েছেন শহরবাসী। এবারক দেরিতেই বর্ষা ঢুকেছে দক্ষিণবঙ্গে। প্রথমে কয়কদিন বৃষ্টি হলেও তার পরে কার্যত বৃষ্টি উধাও হয়ে গিয়েছিল। একেবারে হাসফাঁস গরমে নাজেহাল হচ্ছিলেন শহরবাসী। বাতাসে আপেক্ষিত আর্দ্রতার পরিমাণ ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে গিয়ে্ছিল। যার জেরে গরমের সঙ্গে ঘামের অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছিল।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। নদিয়া জেলাতেও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এই বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হবে। তার পরে বৃষ্টির দাপট বাড়বে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলা গুলিতে। মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই এই বর্ষণ বলে জানানো হয়েছে। রাজস্থানের জয়সলমেঢ় থেকে কোটা, শিবপুরী, ডাল্টনগঞ্জ থেকে পুরুলিয়া এবং কাঁথি পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে মৌসুমী অক্ষকরেখা। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তত রয়েছে এই মৌসুমি অক্ষরেখাটি। আবার উত্তর প্রদেশ থেকে অসম পর্যন্ত আরেকটি অক্ষরেখা বিহার এবং উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে বিস্তৃত রয়েছে।
আগামী শনিবার পর্যন্ত কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে এই মৌসুমি অক্ষরেখার কারণে বর্ষণ চলবে। হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণের পাশাপাশি বজ্রপাতের সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলাতও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বৃষ্টি বাড়বে পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ জেলায়। এছাড়াও কলকাতাতে বর্ষণ চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা শুক্রবার সকাল থেকেই অনেকটা কমে গিয়েছে। রবিবার এবং সোমবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তবে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলবে। বর্ষার শুরু থেকেই বৃষ্টির দাপটে নাজেহাল দশা উত্তরবঙ্গবাসীর। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জেলাগুলিতে বর্ষণের তীব্রতা বেড়েছে। যার জেরে একাধিক জায়গায় ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তার জল বাড়ায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রকবার উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কোচবিহার এবং কালিম্পং জেলাতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আবার শনিবার ভারী বর্ষণ হবে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে।