মহিলাদের নিরাপত্তায় রাজ্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপ: ‘রাত্তিরের সাথী’ কর্মসূচি

আর জি কর-কাণ্ডের জেরে রাজ্য সরকার মহিলাদের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘রাত্তিরের সাথী’ নামে একটি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

এই কর্মসূচির লক্ষ্য হল হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, হস্টেল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যে রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:

• ‘রাত্তিরের সাথী’ অ্যাপ: বিপদের সময় সাহায্য চাওয়ার জন্য একটি নতুন অ্যাপ চালু করা হবে। এই অ্যাপে একটি অ্যালার্ম বোতাম থাকবে, যা চাপলে সরাসরি নিকটবর্তী থানায় সংকেত যাবে।
• ১০০ নম্বরে কল: কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ১০০ নম্বরে কল করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
• সমানুপাতিক হারে নিরাপত্তারক্ষী: হাসপাতালগুলিতে মহিলা ও পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা সমানুপাতিক করা হবে।
• নাইট পেট্রোলিং: পুলিসকে প্রতিটি হাসপাতালে রাতের বেলা পেট্রোলিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
• সচিত্র পরিচয়পত্র: হাসপাতালে কর্মরত সকলকে সচিত্র পরিচয়পত্র পরে থাকতে হবে।
• বেসরকারি সংস্থাগুলিতেও প্রযোজ্য: সরকারি অফিসের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও এই কর্মসূচি অনুসরণ করার আর্জি জানানো হয়েছে।
• নাইট ডিউটি এড়ানো: যতটা সম্ভব মহিলা কর্মীদের রাতের শিফট এড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

হাসপাতালে মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা:

• পৃথক রেস্ট রুম ও শৌচাগার: মহিলা কর্মী, আধিকারিক এবং চিকিৎসকদের জন্য পৃথক রেস্ট রুম ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হবে।
• ‘রাত্তিরের সাথী’ ভলান্টিয়ার: রাতের বেলা হাসপাতাল পাহারায় ‘রাত্তিরের সাথী’র বিশেষ মহিলা ভলান্টিয়াররা থাকবেন।
• সেফ জোন: সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মহিলাদের জন্য নিরাপদ জোন চিহ্নিত করা হবে।
• ব্রেথ অ্যানালাইজার পরীক্ষা: হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্রেথ অ্যানালাইজার পরীক্ষা চালু করা হবে।
• বিশাখা কমিটি: প্রত্যেক সংস্থায় বিশাখা কমিটি থাকতে হবে।
• ১২ ঘন্টার বেশি কাজ বন্ধ: মহিলা চিকিৎসকরা টানা ১২ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না।
• পানীয় জলের ব্যবস্থা: হাসপাতালের প্রতিটি তলে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্য সরকার মহিলাদের নিরাপত্তার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির বার্তা দিয়েছে।