মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান অশান্তি আর এই অশান্তির সুযোগ এই আসল খেলাটা খেলে দিল ভারত। কি বুঝতে পারছেন না ? তাই তো ? আসলে মার্কিন পণ্য আইফোনের বাজার হাতছাড়া চীনের , এই বাজার দখল করলো ভারত। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের আইফোন রফতানি গত বছরের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ বেড়েছে। এই সাত মাসে, ভারতে তৈরি প্রায় ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের আইফোন রফতানি করেছে সংস্থাটি। সব মিলিয়ে, ২০২৪-এ ভারত থেকে আইফোনের রফতানি প্রায় ১০০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাত্র কয়েক বছর আগেও আইফোনের উৎপাদনের জন্য ব্যাপকভাবে চিনের উপর নির্ভরশীল ছিল অ্যাপল সংস্থা। ভারতে অ্যাপল সংস্থার তিনটি সরবরাহকারী রয়েছে – তাইওয়ানের ফক্সকন টেকনোলজি গ্রুপ ও পেগাট্রন কর্পোরেশন এবং দেশীয় টাটা ইলেকট্রনিক্স। তাদের মধ্য়ে সবথেকে বেশি সরবরাহ করে ফক্সকন। ভারত থেকে রফতানি হওয়া অর্ধেক আইফোনই তাদের অ্যাসেম্বল করা। চেন্নাই এর উপকণ্ঠে তাদের আইফোন কারখানা অবস্থিত।
ভারতে স্থানীয় ভর্তুকি, দক্ষ কর্মী বাহিনী, প্রযুক্তিগত সক্ষমতার অগ্রগতির মতো সুবিধা পাচ্ছে অ্যাপল। আর তাই তারা দ্রুত ভারতে তাদের উৎপাদন নেটওয়ার্ক ক্রমে বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে, কর্নাটক অবস্থিত টাটা ইলেকট্রনিক্সের আইফোন কারখানা। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই কারখানা থেকে প্রায় ১৭০ কোটি ডলারের আইফোন রফতানি করা হয়েছে। গত বছর উইস্ট্রন কর্পোরেশনের কাছ থেকে এই কারখানাটি কিনেছিল টাটা।
গত বছর, প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক, মুম্বই এবং নয়া দিল্লিতে অ্যাপলের দোকান চালু করেছিলেন। গত মার্চ মাস পর্যন্ত, ভারতে অ্যাপলের বার্ষিক আয় বেড়ে ৮০০ কোটি টাকা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে অ্যাপলের বিক্রি ৩৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রফতানির ছবিটা উজ্জ্বল হলেও, ভারতের স্মার্টফোন বাজারে এখনও অ্যাপলের দখল ৭ শতাংশের নীচে রয়েছে। বাজার কাঁপাচ্ছে শাওমি, অপো এবং ভিভোর মতো চিনা ব্র্যান্ডগুলি। আর এই আইফোনের ছোট বাজারের উপরই বড় বাজি ধরেছে অ্যাপল।
তাদের সর্বশেষ মডেল, আইফোন ১৬ এবং আইফোন ১৬ প্রো. ম্যাক্স অ্যাসম্বল করা হয়েছে ভারতে। ব্যাঙ্গালোরের দক্ষিণে টেক হাব এবং পুনেতে নতুন খুচরো দোকান খুলতে চাইছে অ্যাপল। তবে এখনও, অ্যাপল সংস্থা উৎপাদন ও বিক্রয়ের জন্য সবথেকে বেশি চিনের উপরই নির্ভর করে।