মমতার তৃতীয়বার নবান্ন যাত্রায় কত পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন? মুখ খুললেন প্রশান্ত কিশোর
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
তিনি রাজনৈতিক ভোট কুশলী , বড়ই অদ্ভুত এক পেশা , বিহারে বিজেপি-জেডিইউ জোট, পঞ্জাবে কংগ্রেস, অন্ধ্রপ্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেস, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে – নিজ নিজ রাজ্যের শাসকের কুরসিতে বসতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকেই শরণাপন্ন হতে হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ও এর ব্যতিক্রম নয়। তৃতীয়বার শাসকের কুরসিতে বসতে বলা ভালো তৃণমূলকে শাসকদলের তকমা পাইয়ে দিতে কত টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ? সে বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি।
অতীতে তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক ভোট কুশলী , তবে বর্তমানে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক নেতা। এহেন প্রশান্ত কিশোর অতীতে মোটা অংকের পারিশ্রমিকের বিনিময় রাজ্যের শাসকের চেয়ারে তৃণমূলকে বসাতে অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন তিনি।
ভোট কুশলী থেকে রাজনৈতিক নেতা – তাঁর গড়া রাজনৈতিক দল ‘জন সুরাজ পার্টি’র এক কর্মসূচিতে শুক্রবার বিহারের বেলাগঞ্জে পিকে জানান, নির্বাচন পিছু তাঁর দক্ষিণার অঙ্ক অন্তত ১০০ কোটি টাকা! তিনি বলেন, ‘‘এখন অন্তত ১০টি রাজ্যের সরকার আমার পরামর্শের জোরে গঠিত হয়েছে। শুধুমাত্র একটি নির্বাচনে পরামর্শ দেওয়ার জন্য আমি ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি নিয়েছি।’’ অর্থাৎ নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে তৃণমূলকেও এই পরিমাণ টাকাই দিতে হয়েছে।
পারিশ্রমিক নিয়ে তৃণমূলের ভিত মজবুত করার গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন তিনি। অভিষেক-পিকে জুটিই ছিল ২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলের অন্যতম চালিকাশক্তি। ২০২১ এর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য তৎকালীন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে রাজ্যে নিয়ে আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভা ভোটের পরই পরামর্শদাতার ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন পিকে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘আইপ্যাকে’র সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। তবে তাঁর তৈরি সংস্থা ‘আইপ্যাক’ তৃণমূলের পরামর্শদাতা হিসেবে রয়ে গিয়েছে। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক টানা দু’মাসের যে জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তার ব্যবস্থাপনাতেও পিকের তৈরি সংস্থার ‘ভূমিকা’ ছিল বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
তৃণমূলের ভোট বৈতরণী পার করার দায়িত্ব নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেন প্রশান্ত কিশোর। ভোটবাক্সে বিজেপি তিন অঙ্কের সংখ্যা পেরোলে ভোটকুশলীর পেশা ছেড়ে দেবেন তিনি , এমন চ্যালেঞ্জও ছুঁড়তে বাকি রাখেননি তিনি। তা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বিদ্রুপ করতেও ছাড়েননি তাঁকে। কিন্তু রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, প্রশান্তের কথাই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছে।
উল্লেখ্য , গত এপ্রিলে ভোটের মাঝেই লোকসভায় বিজেপির আশ্চর্যজনক উত্থান নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। জানিয়ে দিয়েছিলেন , লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক নম্বর দল হবে বিজেপি , কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তৃণমূলের অর্ধেক আসনও পায়নি তারা। আর এখানেই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎবাণী ডাহা ফেল।