প্রযুক্তি

চাকরি ছেড়ে সবাই ডেলিভারির কাজ করবে কেন ? কেন গিগ ওয়ার্কের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে ?

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

চাকরি ছেড়ে সবাই ডেলিভারির কাজ করবে কেন ? কেন গিগ ওয়ার্কের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে ? - West Bengal News 24

আমাদের দেশে অনলাইন ফুড ডেলিভারিতে গত বছর প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। হিসেব বলছে ২০৩০ সালে এটা বেড়ে দাঁড়াবে ৮ লক্ষ কোটি টাকা। বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ গ্রোথ। শীতের এই সময়টা বাঙালির একটু ভাল-মন্দ খাওয়ার সময়। আর মুড ভাল থাকলে আমরা প্রায় সবাই কমবেশি বাইরের খাবার পছন্দ করে। সেজন্য এখন তো আবার রেস্তোরাঁয় যাওয়ারও দরকার নেই। ফোনে অর্ডার দিলে ঘরে বসে গরমা-গরম।

ফুড ডেলিভারি বয়দের সৌজন্যে হোটেল-রেস্তোরাঁর ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠছে। কিন্তু তাঁদের কথা কতটা জানে সবাই ?কোম্পানি ভুল করেও এঁদের ওয়ার্কার কিংবা কন্ট্র্যাক্চুয়াল এমপ্লয়ি বলে না। কর্মী বলে মেনে নিলেই কিছু আইনি দায়বদ্ধতা তৈরি হয়ে যায়। তাই কর্মীর বদলে অন্যান্য গালভরা নাম। পার্টনার বা ক্যাপ্টেন। একজন ঠিকাকর্মীও মালিকের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। কিন্তু এই গিগ ইকনমির কর্মীদের কাছে সে উপায় নেই। কারণ এখানে অফিস নেই। ম্যানেজার বা বসকে চোখের সামনে দেখা যায় না।

ভাবুন তো যে অ্যাপ ক্যাব সংস্থা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করছে। তাদেরই পার্টনার হলেন কিনা আমার-আপনার প্রতিবেশি একজন ছাপোষা ড্রাইভার। যাঁকে রোজ হিসেব করে দিন চালাতে হয়। এটাই আসলে গিগ ইকনমি। যেখানে কেউ কোনও সংস্থার কর্মী নন। সকলেই বড় সংস্থার সহযোগী। ফলে একজন ঠিকাকর্মীর প্রতিও কোনও সংস্থার যে দায়বদ্ধতা থাকে। তা এই ফুড ডেলিভারি বয়েদের বা অ্যাপ ক্যাব চালকদের জন্য তাঁদের সংস্থার থাকে না।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায় খবরের বোঝা হাতে ছুটে চলা রানারের কথা তো সবাই জানা। খাবারের বোঝা হাতে যে রানাররা রোজ সমানে ছুটে চলেছেন। তাঁদের জন্য আমরা ঘরে বসে খাবার পাচ্ছি। যাঁরা এরকম গিগ ইকনমির সমর্থক তাঁদের একটা যুক্তি আছে। এইখানে একজন কর্মী পুরোপুরি স্বাধীন। চাইলে কাজ করবেন। না চাইলে করবেন না। ছুটি চাইলেই ছুটি।

বেশি রোজগার চাইলে বেশি কাজ। চয়েস আপনার হাতে। আবার একইসঙ্গে একজন একাধিক সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারেন। ফোনে একাধিক সংস্থার অ্যাপ খুলে রাখলেই হল। যে বেশি রেট দেবে তার হয়ে কাজ করুন। সারা দেশই যাতে গিগ ইকনমি হয়ে না যায়, তার জন্য নীতি নির্ধারকদের ভাবতে হবে। অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা যদি তাঁদের যোগ্যতার সঙ্গে মানানসই কাজ পেয়ে যান। তাহলে তাঁরা কনভেনশনাল জবই করবেন। গিগ ইকনমির শরিক হতে চাইবেন না।

একজন গিগ ইকনমির কর্মী পেমেন্টের বিষয়ে তাঁর কোম্পানির সঙ্গে দর কষাকষির জায়গাতেই নেই। গাড়িও আপনার। তেলও আপনার। পরিশ্রম আপনার। সবই আপনার। কোম্পানির তো কোনও দায়ই নেই। আছে শুধু একটা অ্যাপ চালানোর খরচ। ছোটো একটা অফিস হলেই হল। এই ব্যবসায় জমি লাগে না। ভারি মেশিন লাগে না। সবটাই তো মাছের তেলে মাছ ভাজা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য