মোতিচুর, ছানাবড়ার পর GI ট্যাগ পেল রামকৃষ্ণদেবের প্রিয় সাদা বোঁদে! গর্বিত কামারপুকুর, খুশির হাওয়া! যদিও ইতিহাসে সাদা বোঁদের সূচনার নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই, তবে স্থানীয়দের মতে, আনুমানিক ১২০০ বঙ্গাব্দ (১৭৯৩-৯৪) নাগাদ মধুসূদন মোদক সহ কয়েকজন ময়রা প্রথম এই বোঁদে তৈরি করেন কামারপুকুরে। ঠাকুরের আবির্ভাব ১৮৩৬ সালে। তখন হাতেগোনা কয়েকটি মিষ্টির দোকানে তৈরি হত এই বিশেষ বোঁদে। ঠাকুর নিজে খেতে ভালবাসতেন এই মিষ্টি, যা তাঁর জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ে।
এই ঋতুতে প্রতিদিন গড়ে ৩-৪ টন সাদা বোঁদে তৈরি হয় কামারপুকুরে। বছরের বাকি সময়ে দৈনিক উৎপাদন ১-২ টন। এতটাই জনপ্রিয় এই মিষ্টি যে বহু মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক শুধুমাত্র এই বোঁদের জন্যই কামারপুকুরে দোকান খুলেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন কামারপুকুরে। তাঁদের অনেকের কাছেই সফরের অন্যতম আকর্ষণ সাদা বোঁদে। মঠ চত্বরে দোকানের সংখ্যা বেড়েছে, পাশাপাশি লাহাবাজার, চটি ও পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও মিলছে এই বোঁদে।
রামকৃষ্ণদেব ও মা সারদা দেবীর প্রিয় মিষ্টি ছিল এই সাদা বোঁদে। আজও কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন দর্শনে এসে এই বোঁদে না কিনে ফেরেন এমন পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। তাই সাদা বোঁদে যেন শুধুই একটি মিষ্টি নয় – এক ঐতিহ্যের স্বাদ, দীর্ঘদিন ধরেই কামারপুকুরবাসীর একটাই দাবি ছিল—এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি পাক নিজস্ব পরিচিতি। এবার GI ট্যাগ পাওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণ হল। স্বীকৃতির আনন্দে আপ্লুত স্থানীয় ময়রা থেকে মিষ্টিপ্রেমী সবাই।