অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যপালের অনুমোদনও নেওয়া হয়। সেই কারণে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া সিবিআই তদন্তের নির্দেশ মঙ্গলবার খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
রায় প্রসঙ্গে শহিদ মিনারে অবস্থানরত চাকরিহারাদের এক সদস্য বলেন, “সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য ছিল না। এটা আদালতের বিচার্য। কিন্তু আমরা এটা দেখলাম যে, যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের তেমন শাস্তি হল না। অন্যদিকে, আমরা যারা যোগ্য, দুর্নীতি না-করেই চাকরি পেয়েছি, শাস্তি তাদেরই হল।”
২০২২ সালের মে মাসে এসএসসিতে নিয়োগের জন্য ছ’হাজারের কাছাকাছি অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল শিক্ষা দফতর । এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও ওই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। হাই কোর্ট জানিয়েছিল, অতিরিক্ত শূন্যপদ গঠনের ওই সিদ্ধান্ত ‘আইনি নয়’। মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই এই মামলাটি প্রধান বিচারপতির এজলাসে ওঠে শুনানির জন্য।
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই তদন্ত করা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত। এছাড়া এ ধরনের শূন্যপদ তৈরি মোটেও বেআইনি নয়। রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে তা করতেই পারে এসএসসি। তাই এতে কোনও তদন্তের দরকার নেই। ফলত রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে হস্তক্ষেপ করছে না শীর্ষ আদালত।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য অতিরিক্ত শূ্ন্যপদ তৈরির অভিযোগ ওঠে, যা বেআইনি বলে দাবি করে আইনজীবীদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘অযোগ্য’দের চাকরি বাঁচাতে ওই শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল।
শুনানিতে জানানো হয়, রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষেই ৬৮৬১টি সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে নিয়োগ হয়েছিল। ২০২৪ সালের এপ্রিলে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল, তা ঠিক হয়নি। সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ।