ঝড়বৃষ্টিতে গরমের দাপট কমল! দক্ষিণবঙ্গে পারদ পতন, কী জানাচ্ছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস?

ভরা বৈশাখে যেন ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়া! অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। সোমবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নেমেছে। “হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কলকাতায় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমেছে!” স্বাভাবিকের তুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কম হলেও, বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে অস্বস্তি থেকেই যাচ্ছে। আজ, মঙ্গলবারও, দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও কালবৈশাখী হতে পারে। “হাওয়া অফিস” সতর্ক করেছে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতের আশঙ্কা নিয়েও।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থান এবং উত্তর-পূর্ব অসমের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। একইসঙ্গে, উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকা এবং কোমোরিন অঞ্চলে তৈরি হয়েছে দুটি ঘূর্ণাবর্ত। শুক্রবার, ২ মে থেকে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে আবহাওয়া পরিবর্তন হতে পারে। পাশাপাশি, দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থান থেকে মধ্য মহারাষ্ট্র পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। আরও একটি উত্তর-দক্ষিণ অক্ষরেখা বিদর্ভ থেকে কেরল পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে, যা মারাঠাওয়াড়া এবং কর্ণাটকের ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। এই সব মিলিয়ে বঙ্গের আবহাওয়ায় বড়সড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, রাজ্যের তাপমাত্রায় আগামী পাঁচ দিন বড় কোনো পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা নেই। ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্র উত্তাল থাকবে বলে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকির জন্য মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার, কলকাতা থেকে নদিয়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। বুধ থেকে শুক্রবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়বে। পশ্চিম ও পূর্ব জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই আজ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে শুক্রবার ফের ঝড়বৃষ্টি বাড়বে বলে পূর্বাভাস। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি — এই পাঁচটি জেলায় বুধবার থেকে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার বৃষ্টি সামান্য কমবে, তবে শুক্রবার ফের ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত বাড়বে। দার্জিলিং থেকে মালদহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। সাথে থাকতে পারে ৪০ থেকে ৫০ কিমি প্রতি ঘণ্টার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া।

সোমবার রাতে কলকাতায় ঝড়বৃষ্টির কারণে রাতের তাপমাত্রা অনেকটা নেমে এসেছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের তুলনায় সামান্য কম। তবে দিনের বেলা জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে এবং সূর্যের তাপে অস্বস্তি বাড়তে পারে। শুক্রবার পর্যন্ত বিকেল অথবা রাতের দিকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হবে। বুধবার ও শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি গতির দমকা হাওয়া বইতে পারে। আজ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা “১৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস”। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল “৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস”। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ “৫১ থেকে ৯৬ শতাংশ”।