পাকিস্তান থেকে আমদানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করল ভারত, ইসলামাবাদকে আর্থিকভাবে কোণঠাসা করার পথে নয়াদিল্লি
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রায় যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানকে আর্থিক চাপে ফেলতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল ভারত সরকার। ইসলামাবাদ থেকে বা সেই দেশের মাধ্যমে কোনও ধরণের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মোদি সরকার। শনিবার প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “পাকিস্তানে উৎপন্ন বা রপ্তানি করা সমস্ত পণ্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি বা পরিবহন, তা অবাধে আমদানিযোগ্য হোক বা অনুমোদনসাপেক্ষ, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করা হল। জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার যে কোনও ব্যতিক্রমের জন্য ভারত সরকারের থেকে পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন।” ইতিমধ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত সব বন্দরগুলোর কার্যক্রমও বন্ধ রাখা হয়েছে।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৫ জন। তদন্তে উঠে এসেছে, এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক বলেও দাবি করা হয়েছে। মূল পরিকল্পনায় হাফিজ সইদের জড়িত থাকার প্রবল আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। এর জেরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও তলানিতে পৌঁছেছে। এর আগে ইসলামাবাদ ভারতের সঙ্গে সব ধরণের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু তার ফল ভুগতে হচ্ছে পাকিস্তানকেই। বহু ক্ষেত্রেই ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরশীল পাকিস্তানের বাজার এখন সংকটে। বিশেষ করে ওষুধের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ঘাটতি। ভারতের কাছ থেকে কাঁচামাল না আসায় চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পাকিস্তানের প্রশাসন তড়িঘড়ি দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী ও সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। এই আবহেই ভারতের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিল।
তবে এখানেই থেমে নেই নয়াদিল্লি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করছে ভারত। “আইএমএফ”, “বিশ্ব ব্যাঙ্ক” ও “এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক”-এর মতো সংস্থাগুলোর কাছে ভারত অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা না করে। “সন্ত্রাসে মদত দেয় ইসলামাবাদ”— এই অভিযোগ তুলে দিল্লি আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপও বাড়াচ্ছে।