২০১০ সালের পর রাজ্য সরকার যে ওবিসি তালিকা তৈরি করেছিল, সেটি আগেই খারিজ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে তালিকা তৈরি করার নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। এবার সেই সমীক্ষা প্রক্রিয়া ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, হাই কোর্ট যে ১১৩টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল, সেই একই সম্প্রদায়গুলোর থেকেই আবার আবেদন গ্রহণ করেছে ‘রাজ্য অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন’। এমনকি সমীক্ষার বিজ্ঞাপন নিয়েও উঠেছে আপত্তি।
বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজা শেখার মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, “কমিশন কী যুক্তিতে সেই বাতিল হওয়া সম্প্রদায়গুলোর থেকেই ফের আবেদন নিচ্ছে?” এ ছাড়া, ‘কমিশন নিজের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি না করে কীভাবে সমীক্ষা চালাতে পারে?’ — এই প্রশ্নেরও মুখে পড়তে হয়েছে কমিশনকে।
এই পরিস্থিতিতে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, কমিশনকে অবিলম্বে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে বিডিওদেরও নির্দেশ জারি করতে হবে, যাতে নতুন করে সমীক্ষার জন্য সম্প্রদায়ভিত্তিক আবেদন আহ্বান করা যায়। পাশাপাশি, ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস’-কেও এই মামলার সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাই কোর্ট।
কমিশন যদিও প্রাথমিকভাবে তাদের সমীক্ষা প্রক্রিয়ার ত্রুটি মানতে চায়নি, তবে পরে আংশিকভাবে আদালতের বক্তব্য মেনে নেয়। একই সঙ্গে তারা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যাতে এখনও পর্যন্ত চলতে থাকা প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করা হয়। হাই কোর্ট আপাতত হস্তক্ষেপ না করলেও জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে কী পদ্ধতিতে এই সমীক্ষা চালিয়ে ওবিসি তালিকা তৈরি হবে, সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য কমিশনকে হলফনামার মাধ্যমে জমা দিতে হবে। আগামী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৯ জুন।