সহকর্মী হিসেবে সম্পর্ক খুব একটা ঘনিষ্ঠ ছিল না আগেও। তবে বিয়ের পর থেকে রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের দূরত্ব যেন আরও বেড়েছে। বিয়েকে কেন্দ্র করে দলের কিছু নেতা নানা রকম মন্তব্য করছেন, কখনও পালটা দিচ্ছেন দিলীপ নিজেই। এইভাবেই দলের অন্দরে অসন্তোষ বাড়ছিল।
সম্প্রতি ‘দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে’ সস্ত্রীক দিলীপের যাত্রা সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে। আর ঠিক এই পরিস্থিতিতে সল্টলেকের দলীয় সদর দফতরে শুরু হওয়া দু’দিনের বৈঠকে ‘রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার’ কড়া বার্তা দেন দলের নেতাদের। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ’কে নিয়ে কোনও মন্তব্য যেন প্রকাশ্যে না আসে, যদি কিছু বলার থাকে তা দলের মধ্যে বলাই উচিত। যদিও এই বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন না দিলীপ ঘোষ। বিষয়টি নিয়ে সুকান্ত বলেন, “আজ তো কোনও বৈঠক ছিলও। আগামিকাল বৈঠক আছে, দেখা যাবে।”
‘দিলীপ ঘোষ’ ইস্যুতে যথেষ্ট চাপে রাজ্য বিজেপি। তাঁর বিয়ে নিয়ে শুরু থেকেই অস্বস্তি ছিল দলের অন্দরমহলে। এরপর ‘দিঘার জগন্নাথ মন্দির’ উদ্বোধনের দিনে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে পুজো দিতে যাওয়ায় বিতর্ক আরও তীব্র হয়। সেই দিনই কোনো দেরি না করে ‘সৌমিত্র খাঁ’ এবং ‘অশোক দিন্দা’ কড়া মন্তব্য করেন। কেউ কেউ ‘দিলীপ ঘোষকে বঙ্গ বিজেপির লজ্জা’ বলেও পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে ‘শুভেন্দু অধিকারী’ এবং ‘সুকান্ত মজুমদার’ প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
দলের বৈঠকে সুকান্ত বলেন, “কোনওরকম বেফাঁস মন্তব্য করবেন না। দলের সবার কাছে অনুরোধ করছি, দিলীপ ঘোষ ইস্যুতে যা বলার, দলের ভিতরে বলুন। দলের বাইরে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না।” এদিনের বৈঠকে ‘সৌমিত্র খাঁ’ আর দিলীপকে নিয়ে কোনও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেননি। ‘শান্তনু ঠাকুর’ জানান, “দিলীপ ঘোষ ব্যক্তিগতভাবে তাঁর রুচি অনুযায়ী নিজের বক্তব্য রাখছেন, আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
তবে এই বৈঠকে দিলীপ ঘোষকে আমন্ত্রণ না জানানো ঘিরে নতুন করে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও বর্তমানে তিনি কলকাতায় নেই। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন ‘পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের কুলিয়ানা গ্রামে’। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, বৈঠকে না ডাকার কারণেই তিনি গ্রামে গিয়েছেন। অন্যদিকে সুকান্তের ব্যাখ্যা, ”আজ তো বৈঠক ছিল না। আগামিকাল বৈঠক আছে, দেখা যাবে।” ফলে বুঝেই নেওয়া যায়, দিলীপ ইস্যুতে এখন বেশ সচেতন অবস্থান নিচ্ছে রাজ্য বিজেপি।