জানুয়ারিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় জন বার্লার উপস্থিতি নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান হল ১৫ মে, বৃহস্পতিবার। আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস ও সুব্রত বক্সী। সুব্রতবাবু জানান, জন বার্লার মতো নেতার দলে যোগদানে চা বাগান এলাকায় সংগঠন আরও মজবুত হবে। তিনি আরও জানান, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্লাকে রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেবেন এবং চা বাগান সংক্রান্ত বিষয়েও তাঁকে কাজে লাগাবেন।
তৃণমূলে যোগ দিয়েই জন বার্লা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সমাজের জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বার্লা নিজেই। তিনি বলেন, “ছয়-সাত মাস ধরেই আলোচনা চলছিল। দিদিও ফোন করেছিলেন। কাজ করার কথা বলেছিলেন।”
চা বাগানের উন্নয়নে কাজ করার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে বার্লা জানান, বিজেপি শাসিত অবস্থায় মন্ত্রী হয়েও তিনি কাজ করতে পারেননি। হাসপাতাল নির্মাণের মতো সামাজিক প্রকল্পে দলীয় নেতৃত্বের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে তোপ দেগে বার্লা বলেন, “নিজের দলের লোকেরাই আমাকে কাজ করতে দেয়নি। যদি হাসপাতাল তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজেই বাধা আসে, তাহলে ওই দলে থেকে কীসের কাজ?”
চা বাগানের শ্রমিকদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “২০১৪ সাল থেকে চা শ্রমিকরা বিজেপিকে সমর্থন জানালেও, তারা কী পেয়েছে?” উল্টোদিকে, মমতার নেতৃত্বে রাজ্য সরকার যেভাবে উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তার প্রশংসা করেন বার্লা। জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান এবং শ্রমিকদের বিষয় নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
বিজেপি প্রসঙ্গে বার্লার বক্তব্য ছিল অত্যন্ত কড়া। শুভেন্দুকে নিশানা করে বলেন, “আমি এমন নেতার সঙ্গে কাজ করতে চাই না, যিনি অন্যের কাজে বাধা দেন। যিনি মানুষকে ভাগ করে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান, তার সঙ্গে দেখা করতেও আগ্রহী নই।”
জন বার্লার এই সিদ্ধান্তে উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।