বিকাশ ভবনে আন্দোলনের সময় অশান্তি ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ যাঁদের সনাক্ত করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অভিযুক্ত শিক্ষকদের কাছে সাত দিনের মধ্যে শোকজের জবাব চাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে যে প্রতিবাদ সভা হয়েছিল, সেখানে ঠিক কী কী অবৈধ কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ রয়েছে পাঠানো শোকজ নোটিশে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই দিন বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে জমায়েত হয়েছিলেন। ছবি এবং ভিডিও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা গিয়েছে যে, অনেকেই অবৈধ কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন। স্কুলশিক্ষা দপ্তর সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে বিকাশ ভবনের চত্বরে। অভিযোগ, সেদিন গেট ভেঙে দেওয়া হয় এবং সরকারি সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি নতুন তালা লাগিয়ে ওই ভবনের কর্মী ও পরিষেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁরা ছাড়া পান। কিন্তু সেই সময়ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভব্য ব্যবহার এবং গালিগালাজের অভিযোগ ওঠে।
শোকজ নোটিশে জানানো হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের কেন এই ধরনের আচরণে যুক্ত হতে হল এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না কেন, তার যুক্তিগুলি বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে।
শিক্ষক আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ উঠছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হওয়ার পর, এবার এই আন্দোলনে নতুন করে রাজনৈতিক মাত্রা যোগ হয়েছে।
চাকরি হারানো এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের একাংশ আন্দোলনকারী বুধবার বিজেপির বিধাননগর কার্যালয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। এ বিষয়ে আন্দোলনের নেতা সুমন বিশ্বাস জানান, ‘এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের চাকরিহারারা নিজেদের চাকরি বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইতে বিজেপি অফিসে যাওয়া হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার প্রার্থী চাকরি হারান। একাধিক জটিলতা পেরিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা স্কুলে গিয়ে বেতন পাবেন। তবে অশিক্ষক কর্মীরা আপাতত চাকরিচ্যুত। এসএসসি-কে ফের নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘যোগ্য’ চাকরি হারানো প্রার্থীদের একটা বড় অংশ আর নতুন করে পরীক্ষায় বসতে রাজি নন। তাঁরা লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ১৫ মে বিকাশ ভবনের সামনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলন।