স্মৃতি মুছে ফেলছে নতুন বাংলাদেশ! পরিবর্তন হল সুচিত্রা সেন হোস্টেলের নাম

২০২৪ সালের আগস্ট থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে ব্যাপক রদবদল। ‘হাসিনা-পরবর্তী যুগে’ তথাকথিত ছাত্র আন্দোলনের নামে যেভাবে চরম ভারতবিরোধিতা প্রকাশ পাচ্ছে, তা নিয়ে উঠছে তীব্র বিতর্ক। এবার সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল ইউনুস সরকার। পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের একটি ছাত্রী হোস্টেল, যা বহুদিন ধরে ‘সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস’ নামে পরিচিত ছিল, সেটির নাম এবার পাল্টে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সুচিত্রা সেন জন্মসূত্রে পাবনার কন্যা ছিলেন। সেই শ্রদ্ধা থেকেই তাঁর নামে ছাত্রীনিবাসটির নামকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তার পরিবর্তে ওই হোস্টেলের নাম রাখা হয়েছে ‘জুলাই-৩৬ ছাত্রীনিবাস’। শুধু এটুকুই নয়, শেখ হাসিনার আমলের নানা নিদর্শন মুছে ফেলতে দৃশ্যত একপ্রকার অভিযান শুরু করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। সেই ধারাতেই পরিবর্তন করা হয়েছে শেখ হাসিনার পরিবারের আরও দুই সদস্যের নামে থাকা হোস্টেলগুলোর নাম।

এই মঙ্গলবার পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ তিনটি নতুন নামফলকের উদ্বোধন করেন। সেখানে দেখা যায়, ‘শেখ রাসেল হস্টেল’-এর নাম পাল্টে রাখা হয়েছে ‘বিজয়-২৪ ছাত্রবাস’ এবং ‘বেগম ফজিলাতুন্নেসা হোস্টেল’-এর নাম বদলে রাখা হয়েছে ‘আয়েশা সিদ্দিকা’। তবে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে স্থানীয়দের একাংশ তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষত, সুচিত্রা সেনের নাম মুছে ফেলার ঘটনায় ক্ষোভের সুর আরও প্রবল হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য, ভারতীয় সিনেমার মহাতারকা সুচিত্রা সেনের শৈশব কেটেছে পাবনার গোপালপুরে। সেখানেই ছিল তাঁর পৈতৃক ভিটে। পরে বিয়ের পর তিনি কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। সূত্রে জানা যায়, ১৯৬০ সালে সুচিত্রার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত তাঁদের সেই বাড়ি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়ায় দিয়ে কলকাতায় চলে যান। পরে সেই বাড়িটি বেহাত হলেও কিছু বছর আগে তা পুনরুদ্ধার করে ‘সুচিত্রা সংগ্রহশালা’ হিসেবে সংরক্ষিত করা হয়।

এমন এক কিংবদন্তি অভিনেত্রীর স্মৃতিতে তৈরি ছাত্রীনিবাসের নাম এভাবে বদলে দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব নিয়ে উঠেছে বড় প্রশ্ন।