ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে রাজনীতির পথে, কালীগঞ্জে বিধানসভা নির্বাচনে মুখোমুখি প্রয়াত বিধায়কের কন্যা
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
পেশাগতভাবে একজন ‘বিটেক ইঞ্জিনিয়ার’ হলেও, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রবেশের প্রেরণা কিছুটা বাবার থেকেই পেয়েছিলেন। তবে সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামতে হবে, তা বোধহয় আগে ভাবেননি ‘কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ’। কিন্তু পরিস্থিতি তাঁকে বাবার অসমাপ্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য করেছে। প্রয়াত বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের মেয়েকে এবার প্রার্থী করেছে রাজ্যের শাসকদল।
মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ‘কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে’ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে ‘আলিফা আহমেদের নাম’। তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে আগে থেকেই নানা মহলে আলোচনা চলছিল। জেলাস্তরে নেতৃত্বের একটা বড় অংশ নিশ্চিত ছিল যে তিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। শুধু ছিল অফিসিয়াল ঘোষণার অপেক্ষা। অবশেষে দলের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই তাঁকে শুভেচ্ছাবার্তায় ভরিয়ে দিয়েছেন সমর্থকরা। কৃষ্ণনগরের সাংসদ ও জেলা তৃণমূল চেয়ারপার্সন ‘মহুয়া মৈত্র’-ও তাঁকে সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অনেকেই মনে করছেন, ‘মহুয়া মৈত্রের’ রাজনৈতিক যাত্রাপথ ও পটভূমির সঙ্গে আলিফার অনেক মিল রয়েছে। রাজনীতিতে আসার আগে মহুয়া কর্পোরেট দুনিয়ায় উচ্চপদে ছিলেন। ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্কিং সেক্টর’-এ কাজ করেছেন তিনি। স্বচ্ছন্দ জীবন ত্যাগ করে সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। প্রথমে ‘করিমপুরের বিধায়ক’, পরে বিতর্ক পেরিয়ে দু’বার ‘কৃষ্ণনগর থেকে সাংসদ’ হন। আলিফার ক্ষেত্রেও রয়েছে তেমনই মোড়।
বয়স ৩৮, আলিফা কৃষ্ণনগরের একটি স্বনামধন্য ‘ইংরেজি মাধ্যম স্কুল’ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে, ‘দুর্গাপুর থেকে বিটেক’ করেন। বর্তমানে তিনি দেশের একটি খ্যাতনামা ‘বহুজাতিক সংস্থায়’ গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। রাজনীতির ময়দানে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল মূল স্তর থেকেই। ‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে’ তিনি নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্য হন। তবে ‘২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটে’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এবার তাঁর সামনে বড় লড়াই — ‘২০২৫ সালের বিধানসভা উপনির্বাচন’।
বাবার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তার ছায়া তাঁর পাশে রয়েছে। ফলে জনসংযোগের ক্ষেত্রেও তিনি ভালো জায়গায় রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। নিজের অবস্থান সম্পর্কে আশাবাদী আলিফা বলেছেন, “নিজের কাজ, দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সচেতন। তাই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।” তাই রাজনৈতিক মহলে ধারণা, কর্পোরেট দুনিয়া ছেড়ে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।