কাশ্মীরের পাহাড় ঘেঁষে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু দিয়ে ছুটবে ট্রেন, শুক্রবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

মাত্র এক দিনের ব্যবধানে, চালু হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেল সেতুর (Chenab Rail Bridge) উপর ট্রেন চলাচল। জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার চন্দ্রভাগা নদীর ওপর নির্মিত এই অনন্য সেতুটি শুক্রবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে তিনি উদ্বোধন করবেন শ্রীনগর থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দির সংলগ্ন কাটরা পর্যন্ত চলাচলকারী ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এর। ট্রেনটি মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে এই রুট অতিক্রম করবে, যেখানে গাড়ি পথে পৌঁছতে প্রায় সাত ঘণ্টা সময় লাগে।

মূলত গত ১৯ এপ্রিলই এই প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এরপর ২২ এপ্রিল পহলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান সম্পন্ন হলে তবেই প্রধানমন্ত্রীর কাশ্মীর সফর নিশ্চিত হয়। জম্মু তাওয়াই স্টেশন থেকেই শুরু হবে উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগের বারামুলা-কাটরা অংশের প্রথম ট্রেন চলাচল। চন্দ্রভাগার ওপর নির্মিত এই বিশ্বসেরা রেলসেতুর নির্মাণে সময় লেগেছে দীর্ঘ ২২ বছর।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে বাজপেয়ী সরকারের আমলে এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০০৪ সালে কাজ শুরু হলেও ২০০৯ সালে তীব্র বাতাসের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালে সেতুর পার্শ্ববর্তী কাজ শেষ হয় এবং ২০২১ সালে আর্চ নির্মাণ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের আগস্টে সম্পূর্ণ নির্মাণ শেষ হয়।

এই ব্রিজ স্টিল ও কংক্রিট দিয়ে এমনভাবে নির্মিত, যাতে ‘রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও’ এটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এমনকি বড় বিস্ফোরণ হলেও ক্ষতির সম্ভাবনা খুবই কম। রেল দফতরের আধিকারিকদের মতে, ‘জঙ্গি হানার সম্ভাবনা ও ভূমিকম্প’ মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক সুরক্ষা ব্যবস্থা।

‘শ্রীনগর-কাটরা বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এ থাকছে একটি এক্সিকিউটিভ ক্লাস সহ সাতটি এসি চেয়ার কার। ট্রেনটি কাটরা থেকে সকাল ৮:১০-এ রওনা দিয়ে শ্রীনগরে পৌঁছবে ১১:২০ মিনিটে। অন্যদিকে, শ্রীনগর থেকে সকাল ৮:৫৫-এ ছেড়ে কাটরায় পৌঁছবে ১২:০৫ মিনিটে। ভবিষ্যতে এই পরিষেবা ‘বুদগাঁও’ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এখনও ভাড়া ঘোষণা হয়নি, তবে অনুমান করা হচ্ছে সাধারণ চেয়ারকারের জন্য ভাড়া হবে ‘১,৫০০ থেকে ১,৬০০ টাকা’র মধ্যে এবং এক্সিকিউটিভ ক্লাসের জন্য ভাড়া পড়বে ‘২,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকা’র মধ্যে।