লর্ডসে শুরু হয়ে গেল ভারতীয় দলের অনুশীলন, নতুন স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচেরও আনুষ্ঠানিক যোগদান

টেস্ট ক্রিকেটে ভারতীয় দলের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। ‘বিরাট কোহলি’ ও ‘রোহিত শর্মা’-র অধ্যায় এখন অতীত। দল পরিচালনার দায়িত্ব বর্তেছে কোচ ‘গৌতম গম্ভীর’ এবং অধিনায়ক ‘শুভমান গিল’ (Shubman Gill)-এর কাঁধে। এই নতুন জুটির পথচলা শুরু হতে চলেছে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে। ইতিমধ্যেই লন্ডনে পৌঁছে সিরিজের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারতীয় দল।

এই সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে ‘বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর নতুন চক্র। আগের মৌসুমের শেষটা ভালো না হওয়ায় ফাইনালে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। যদিও দীর্ঘ সময় তারা ফাইনালের রেসে ছিল, তবে শেষ দুটি সিরিজ—নিজের ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এবং অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে—খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হারিয়ে প্রথম দুইয়ের বাইরে চলে যায়। ফলে এবারের ‘লর্ডস’-এ অনুষ্ঠিত ফাইনালে জায়গা হয়নি ভারতের। সেই লর্ডসেই শনিবার থেকে শুরু হল ভারতের অনুশীলন, যেখানে ‘গিল’, ‘ঋষভ পন্থ’ সহ দলের বেশিরভাগ সদস্য হাজির ছিলেন। ইন্ডোর প্র্যাকটিস সেশনে ব্যাট-বলের প্রস্তুতিতে নেমেছে দল।

‘ভারতীয় বোর্ড’ যে ভিডিওটি প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা গিয়েছে ক্রিকেটাররা শরীরচর্চায় মন দিয়েছে। পরে মাঠে নেমে ফিল্ডিং অনুশীলনও করতে দেখা যায় তাঁদের। যদিও পুরো দল তখনও একত্রিত হয়নি। কারণ ‘কেএল রাহুল’, ‘নীতীশকুমার রেড্ডি’-সহ কয়েকজন খেলোয়াড় বর্তমানে রয়েছেন ‘নর্দাম্পটন’-এ। তারা ‘ভারত এ’ দলের হয়ে দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্ট খেলছেন ‘ইংল্যান্ড লায়ন্স’-এর বিরুদ্ধে। তবে প্রধান কোচ ‘গম্ভীর’ এবং তাঁর সহযোগী স্টাফরা ছিলেন প্রস্তুতিতে। এই অনুশীলন শিবিরে যুক্ত হয়েছেন নতুন স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ ‘আদ্রিয়ান লা রুঁ’, যিনি এর আগে ‘২০০২-০৩’ সালে ভারতীয় দলের সঙ্গেই এই ভূমিকায় কাজ করেছেন। বহু বছর পর ইংল্যান্ড সফরের মাধ্যমে তিনি আবার ভারতের সাপোর্ট স্টাফে ফিরে এলেন। উল্লেখ্য, এবার এই টেস্ট সিরিজের নামও নতুনভাবে ঠিক করা হয়েছে—এবার আর ‘পতৌদি ট্রফি’ নয়, ‘তেণ্ডুলকর-অ্যান্ডারসন ট্রফি’ নামেই আয়োজিত হবে এই লড়াই।

ইংল্যান্ডের তারকা পেসার ‘জোফ্রা আর্চার’ প্রথম টেস্টে খেলবেন না বলে নিশ্চিত। পাশাপাশি ‘ওলি স্টোন’, ‘মার্ক উড’ এবং ‘গাস অ্যাটকিনসন’-রাও চোটের কারণে এই সিরিজে অংশ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।

অন্যদিকে, অবশেষে ফর্মে ফিরলেন ‘অভিমন্যু ঈশ্বরণ’। ‘ভারত এ’ দলের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ‘ইংল্যান্ড লায়ন্স’-এর বিরুদ্ধে ৮০ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেছেন তিনি। যদিও সম্প্রতি ধারাবাহিক ব্যর্থতায় তাঁর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ‘রাহুল’ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১ রান করেছেন, এর আগে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন শতরান। তবে ব্যর্থ হয়েছেন ‘যশস্বী জয়সওয়াল’ (৫) এবং ‘করুণ নায়ার’ (১৫)। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার সময় ভারতের স্কোর ছিল ১৬৩/৪। এর আগে ‘ইংল্যান্ড লায়ন্স’ প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩২৭ রান। তবে ম্যাচটি বারবার ‘বৃষ্টির’ কারণে ব্যাহত হয়েছে।

দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের স্কোর ছিল ১৯২/৩। সেদিন ভারতীয় বোলাররা সেভাবে প্রভাব ফেলতে না পারলেও, তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে দারুণ প্রত্যাবর্তন করে মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ‘খলিল আহমেদ’ (৪/৭০)-এর দাপটে ‘লায়ন্স’ ২১৯/৩ থেকে ২২৯/৭-এ এসে দাঁড়ায়। যদিও চাপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় ভারতীয় দল। শেষদিকে ‘জশ টাঙ্গ’ (৩৬ নঃআঃ) ও ‘ফারহান আহমেদ’ (২৪)-এর পার্টনারশিপে শেষ দুই উইকেটে ৮৪ রান যোগ হয়। এছাড়া ‘অংশুল কম্বোজ’ (২/৫৬) ও ‘তুষার দেশপাণ্ডে’ (২/৬২) দুইটি করে উইকেট পান। প্রথম ইনিংসে ভারত তুলেছিল ৩৪৮ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ‘এ’ : ৩৪৮ ও ১৬৩/৪ (‘অভিমন্যু’ ৮০, ‘রাহুল’ ৫১, ‘ওকস’ ২/৩১)।
ইংল্যান্ড লায়ন্স : ৩২৭ (‘এমিলিও’ ৭১, ‘জর্ডন’ ৪৪, ‘খলিল’ ৪/৭০)।