জনগণের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীর বড় পদক্ষেপ, আপাতত বন্ধ থাকছে স্মার্ট মিটার বসানো
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
আবারও সাধারণ মানুষের পক্ষে এক বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গৃহস্থদের ঘরে আধুনিক ‘স্মার্ট মিটার’ বসানো নিয়ে গত কিছুদিন ধরে বিক্ষোভের খবর মিলছিল। এই বিষয়টি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচিত হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এরপরেই, সোমবার রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয় যে, আপাতত গৃহস্থ বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। যদিও এর মধ্যেই সরকারি দফতর, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ‘টেলি কমিউনিকেশন টাওয়ার’-এ সফলভাবে স্মার্ট মিটার বসিয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম।
‘দিল্লি’, ‘মুম্বই’-এর মতো বড় শহরগুলিতে স্মার্ট মিটার চালু হওয়ার ফলে বিদ্যুৎ খরচ কমেছে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে — এমনটাই জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে রাজ্যের তিন থেকে চারটি জেলায় গৃহস্থদের বাড়িতেও এই মিটার বসানো হয়েছিল। তবে বেশ কিছু জায়গায় অভিযোগ উঠতে শুরু করায়, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম সিদ্ধান্ত নেয় আপাতত সাধারণ ঘরে স্মার্ট মিটার বসানো হবে না। এই সিদ্ধান্তের কথা সোমবার এক সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্ট মিটার চালু হলে গ্রাহকরা বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন। তাঁদের মতে, ‘প্রিপেড মোবাইল রিচার্জের মতোই স্মার্ট মিটার ব্যবহার করা সম্ভব হবে।’ বিদ্যুৎ দপ্তরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ‘সাধারণ মিটারে আগে যেটুকু সিকিউরিটি ডিপোজিট রাখা হতো, স্মার্ট মিটারে সেটি শুরুতেই ব্যবহার করা যাবে।’ এমনকি যদি প্রিপেড রিচার্জ শেষ হয়ে যায়, তাতেও সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না — এমন আশ্বাসও দিয়েছেন নিগমের শীর্ষ ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের আরও মতে, গ্রাহকরা ‘৩০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন।’ তাই স্মার্ট মিটারে বিল বেশি আসবে — এমন গুজব ‘ভুল’ এবং ‘বিজ্ঞানভিত্তিক নয়’, দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
‘দক্ষিণবঙ্গের দুই ২৪ পরগনা, বর্ধমান ও বাঁকুড়ার কিছু নির্দিষ্ট এলাকায়’ গৃহস্থদের ঘরে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছিল। এই নিয়ে কিছু জায়গায় ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরে বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় আপাতত এই প্রকল্প স্থগিত রাখা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা জানান, স্মার্ট মিটারের অন্যতম সুবিধা হল ‘বিল আরও নির্ভুল ও স্বচ্ছভাবে পাওয়া যাবে।’
এছাড়া, গ্রাহকরা চাইলে ‘মোবাইল সেটিংয়ের মতো’ নিজেরা মিটার কনফিগার করে নিতে পারবেন, যার ফলে দৈনিক বা আধ ঘণ্টার ব্যবধানে বিদ্যুৎ খরচের হিসাব তাঁরা মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারবেন। স্মার্ট মিটারে একটি ‘ইন হাউস ডিসপ্লে মনিটর বোর্ড’ থাকবে, যা রিয়েল টাইমে বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখাবে। তাছাড়া গ্রাহক যদি বাড়িতে না থাকেন, তবে মোবাইলের মাধ্যমেই সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখা সম্ভব — যা দুর্ঘটনা বা অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের ঝুঁকি অনেকটাই কমাবে।