লন্ডন সফরে গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস-কে। বিদেশের মাটিতে কালো পতাকা প্রদর্শনের পাশাপাশি, ‘গো ব্যাক’ স্লোগানে মুখর হন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই সফরে ইউনুসের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা থাকলেও, সেই বৈঠক আর হচ্ছে না বলেই খবর।
সূত্র অনুযায়ী, বিএনপি নেতা তারেক জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতেই মঙ্গলবার লন্ডনে যান ইউনুস। উল্লেখ্য, তারেক দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটেনে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে আলোচনা করতেই তাঁর এই সফর বলে জানা গেছে। কিন্তু ইউনুস লন্ডনে পৌঁছানোর পরই শুরু হয় বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সকালে তাঁর হোটেলের সামনে আওয়ামি লিগের ব্যানারে শতাধিক বাংলাদেশি প্রতিবাদ জানান। তাঁরা ‘গো ব্যাক’ ধ্বনিতে রাস্তায় নেমে আসেন এবং ইউনুসকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশে চলা সহিংসতার মূল ষড়যন্ত্রকারী তিনি’।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘শেখ হাসিনাকে সরানোর পর বাংলাদেশে যে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, মৌলবাদ ও হিংসার উত্থান ঘটেছে— তার জন্য সরাসরি দায়ী ইউনুস ও তাঁর প্রশাসন। দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়া, সবকিছুর পিছনে এই মৌলবাদীদের মদত রয়েছে।’
তাঁরা আরও দাবি করেন, ‘হামলার আশঙ্কায় যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই এখন টার্গেট করে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।’ সেইসঙ্গে তাঁরা দ্রুত নির্বাচনের দাবি তোলেন এবং বলেন, ‘নির্বাচনে আওয়ামি লিগকেও অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে’।
অন্যদিকে, ইউনুসের এই সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মার-এর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, তাঁর এই সফরে ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে কোনও ধরনের সরকারিভাবে স্বীকৃত অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিকে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অপমান হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সাধারণত কোনও রাষ্ট্রনেতা বিদেশ সফরে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার তাঁকে সম্মান জানায়, কিন্তু ইউনুসের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।