বিচিত্রতা

যৌবন ফিরে পেতে ৯০ ঘণ্টা বদ্ধ ট্যাংকে, অতঃপর…

যৌবন ফিরে পেতে ৯০ ঘণ্টা বদ্ধ ট্যাংকে, অতঃপর… - West Bengal News 24

নিজের যৌবন ফিরে পেতে বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন এক আমেরিকান উদ্যোক্তা ও পুঁজি ব্যবসায়ী। তার নাম ব্রায়ান জনসন। তিনি পেশাগতভাবে যেমন সফল, তেমনি একাধিক থেরাপির মাধ্যমে তার ‘যৌবন’ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

৪৭ বছর বয়সী ব্রায়ান জনসন সম্প্রতি ৯০ ঘণ্টা একটি বদ্ধ ট্যাংকে কাটিয়েছেন, যা তাকে তার শরীরের বয়স কমানোর ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

এর আগে ব্রায়ান অপারেশন ব্লুপ্রিন্ট নামে একটি চিকিৎসা পদ্ধতিও গ্রহণ করেছিলেন, যেখানে প্রতি ছয় মাসে এক লিটার প্লাজমা নেওয়া হত। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজের পুত্রের কাছ থেকেও প্লাজমা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি, তবে তাতেও তৃপ্তি পাননি ব্রায়ান। এর পরেই তিনি একটি ব্যতিক্রমী চিকিৎসা পদ্ধতির দিকে আগ্রহী হন, যা তকে ৫৪০০ মিনিট বা ৯০ ঘণ্টা বদ্ধ ট্যাংকে কাটাতে বাধ্য করেছে।

ব্রায়ান জনসন সম্প্রতি হাইপারবেরিক অক্সিজেন থেরাপি নামে একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন, যেখানে তাকে একটি বিশেষ চেম্বারে বসিয়ে উচ্চ চাপের মধ্যে ১০০% অক্সিজেন দেওয়া হয়। এর ফলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং আঘাতপ্রাপ্ত কোষ অংশগুলো দ্রুত সেরে ওঠে।

এই থেরাপি ৯০ দিন ধরে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে ৯০ ঘণ্টা দীর্ঘ হয়। ব্রায়ান তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ইউটিউবে তার নিজ চ্যানেল। সেখানে তিনি জানান, এটা এমন একটি থেরাপি, যা বয়সজনিত নানা সমস্যা যেমন শারীরিক ক্ষতি, প্রদাহ, আয়ু সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর সমাধান করে। এর ফলে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে এবং বয়সও কমে যেতে পারে।

এই থেরাপির পর ব্রায়ান বেশ কিছু আশ্চর্যজনক ফলাফল দেখতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “যতটা ফলাফল আশা করেছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি ভালো হয়েছে। আমার রক্তচাপ এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে, শরীরের প্রদাহ সম্পূর্ণ কমে গেছে, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বয়সের সঙ্গে ক্রোমোজোমের টেলোমেয়ার যে ছোট হয়ে যায়, তা এখন দীর্ঘ হয়েছে।”

টেলোমেয়ার হল কোষের প্রান্তিক অংশ, যা প্রতিটি কোষের বিভাজন সময়ে ছোট হয়ে যায় এবং বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে এর দৈর্ঘ্য কমতে থাকে। তবে এই থেরাপির ফলে ব্রায়ানের টেলোমেয়ার দীর্ঘ হয়েছে, যা তার জন্য একটি বড় সাফল্য।

হাইপারবেরিক অক্সিজেন থেরাপি (HBOT) একজনের শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন প্রবাহ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং প্রতিটি সিস্টেম ভালোভাবে কাজ করতে থাকে। এই পদ্ধতিতে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত হয়, আলঝাইমার্স কমে যায়, এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমে আসে।

ব্রায়ান আরো বলেন, তার অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি ২৮.৬% কমে গেছে এবং পেটের ভালো ব্যাকটেরিয়াও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শরীরের মেটাবলিজমকে শক্তিশালী করেছে।

হাইপারবেরিক অক্সিজেন থেরাপি আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় একটি অত্যন্ত বিশ্বস্ত পদ্ধতি। তবে, এটি এখনও বেশ ব্যয়বহুল এবং সবার কাছে সহজলভ্য নয়। এর পাশাপাশি, এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও গবেষণা এবং ক্লিনিক্যাল পর্যালোচনা প্রয়োজন, যাতে এটি আরও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য