ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সামরিক অভিযানে নেমেছে ইজরায়েল। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ (Operation Rising Lion)। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান জামকারান মসজিদের উপর লাল পতাকা উত্তোলন করে যুদ্ধ পরিস্থিতির বার্তা দিয়েছে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরেই ওই পতাকা ওড়ানো হয়। গোটা বিশ্বে ইজরায়েলের দূতাবাসগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশও জারি হয়েছে। কিন্তু আসলে কেন এই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হল? শুধুই কি আমেরিকার উসকানি এর পেছনে দায়ী?
ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষের পেছনের কারণ কী?
ইজরায়েলের দাবি, ইরানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যা গোটা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক। আত্মরক্ষার যুক্তিতেই তারা সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রম সীমা ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। এই কারণেই ১৩ জুন ভোররাতে শুরু হয় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। প্রথম ধাপে ইজরায়েল আক্রমণ চালায় তেহরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু ঘাঁটিতে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পকে কেন্দ্র করেই তারা হামলা চালিয়েছে। প্রধান লক্ষ্য ছিল নাতাঞ্জের পরমাণু স্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।
১৫টি পারমাণবিক বোমা তৈরির সম্ভাবনা!
ইজরায়েলের এই অভিযানে প্রাণ হারান ইরানের সামরিক প্রধান মহম্মদ বাঘেরি। নিহত হন আরও বেশ কয়েকজন নামী পরমাণু বিজ্ঞানী। ইজরায়েল জানায়, তাদের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ইরান বিপুল পরিমাণে ইউরেনিয়াম মজুত করছে এবং তাদের ক্ষমতা রয়েছে অন্তত ১৫টি পরমাণু বোমা তৈরির। এই দাবি যে ভিত্তিহীন নয়, তা ইঙ্গিত দিয়েছে ইরানও—নাতাঞ্জে ইজরায়েলের হামলার পর ইরান জানিয়েছে, তারা এখনও পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে সক্ষম!
“অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩”
ইজরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান পাল্টা ড্রোন আক্রমণ চালিয়েছে। শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে ইজরায়েলের একাধিক এলাকায় হামলা করা হয়েছে। এই পাল্টা অভিযানকে ইরান নাম দিয়েছে “অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩” (Operation True Promise-3)। দুই দেশ বহু বছর ধরেই একে অপরের প্রবল প্রতিপক্ষ। ইজরায়েলের অভিযোগ, ফিলিস্তিন সংঘাতে হিজবুল্লাহ ও হামাসের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সরাসরি সহায়তা করছে ইরান। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছিল। এরই মধ্যে গত বুধবার মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে যুদ্ধের আভাস স্পষ্ট হয়ে ওঠে।