‘ফের হামলা চালালে তেহরানকে জ্বালিয়ে দেব’, ইরানকে হুঁশিয়ারি ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
ইরান যদি আবার ইজরায়েলের কোনও শহরে আক্রমণ চালায়, তার ফলাফল ভয়াবহ হবে—এই হুঁশিয়ারি দিলেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, “তেহরানকে জ্বালিয়ে দেব।”
শনিবার তিনি ইজরায়েলের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ডিরেক্টর ডেভিড বার্নিয়ারের সঙ্গে এক নিরাপত্তা বৈঠকে অংশ নেন। সেখানেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আয়াতোল্লা ইরানের নাগরিকদের বন্দি করে রেখেছেন। ইজরায়েলের নাগরিকদের উপর এই ধরনের জঙ্গি হামলা চালালে ফল খুব খাপার হবে। তেহরানকে আমরা জ্বালিয়ে দেব।”
ইজরায়েলের তরফে শুক্রবার ইরানে হামলা চালানোর পর থেকেই পালটা আক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেই শঙ্কা মেটাতে একদিন পরই পালটা জবাব দিল ইরান। সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি, ইরান মাত্র ৬৫ মিনিটে ২০০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর পালটা প্রতিক্রিয়া হিসেবেই ইজরায়েলও আবার হামলা চালায়।
তেহরান তাদের এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, মূল টার্গেট ছিল ইজরায়েলের সেনা ছাউনি। এই আক্রমণে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৩৪ জন। অন্যদিকে, ইজরায়েল শুক্রবারই ইরানের প্রায় ৩৩০টিরও বেশি স্থানে ‘অপারেশন রাইজিং সান’ চালায় এবং শনিবার ফের ইরানকে নিশানা করে। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৮ জন, আহত প্রায় ৩২০।
ইজরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়। এই আঘাতে নিহত হন ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, এমার্জেন্সি কমান্ডের এক উচ্চপদস্থ কর্তা ও আরও দুই সেনা শীর্ষকর্তা। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিও। ইরানের তরফে দাবি, এই হামলায় তাঁদের পারমাণবিক গবেষণায় যুক্ত কমপক্ষে ৬ জন বিজ্ঞানীও প্রাণ হারিয়েছেন। আরও বহু সেনা ও আধিকারিকও মারা গিয়েছেন।
এই সংঘাতের জেরে ইরান ও ইরাক উভয়েই নিজেদের আকাশপথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে বিমান চলাচল কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বহু এয়ারলাইনস তাদের পরিষেবা আপাতত বন্ধ রেখেছে। শনিবার ফের দু’দেশের মধ্যে পালটা হামলা সংঘটিত হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।