
আরও এক বিকৃত রুচির শিক্ষিকার সন্ধান মিলেছে। তিনি শারীরিক ক্ষুধা মেটাতে তারই এক ছাত্রকে শিকারে পরিণত করেছেন। এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের হ্যামিলটন কাউন্টিতে অবস্থিত সেন্ট জাভিয়ার হাই স্কুলে। মঙ্গলবার এ মামলায় রায় দেয়ার কথা বিচারকের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিনসিনাতি। অভিযোগ উঠেছে, ওই শিক্ষিকা আরও শিক্ষার্থীকে যৌনতায় উদ্দীপ্ত করেছেন।
২০২৪ সালের অক্টোবরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ওই স্কুলের লার্নিং সেন্টারের প্রধান এমিলি নাটলি (Emily Nutley) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। এমিলির বয়স ৪২ বছর। তিনি বিবাহিত। সন্তান আছে। এমিলি নাটলি ওই স্কুলের একটি প্রোগ্রামের সমন্বয়ক। এই প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষাদানে সহায়তা করে। ওই স্কুলের স্টাফরা এ বিষয়টি সব ক্যাথোলিক হাইস্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে এমিলি সম্পর্কে রিপোর্ট করেন।
এসব কথা বলা হয়েছে আদালতে দাখিল করা ডকুমেন্টে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৭ই অক্টোবর ওই বালকের মা শিক্ষার্থী বিষয়ক ডিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, যা ঘটেছে সে সম্পর্কে পিতামাতার কাছে সব বলেছে তার টিনেজ ছেলে। পরের দিন ছিল সোমবার। এদিন ওই টিনেজ বালক স্কুল অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বলেন, এমিলি নাটলি অবাহতভাবে তাকে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠাতেন। নিজের নগ্ন ছবি পাঠাতেন। কমপক্ষে চারবার তাদের মধ্যে সরাসরি শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে।
ওই সময় এই টিনেজারের বয়স ছিল ১৭ বছর। ২০২৩ সালের শেষের দিকে প্রথম তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে এমিলি নাটলির (Emily Nutley) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু এ কথা শুনে এমিলি আত্মহত্যা করার হুমকি দেন। বালকটি যাতে মুখ বন্ধ করে রাখে এ জন্য তাকে অর্থ দিতেন এমিলি নাটলি। আভ্যন্তরীণ তদন্তের পর ২০২৪ সালের ১১ই অক্টোবর স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে যে, এমিলিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর তিন সপ্তাহ পরে বেশ কিছু অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এ বছর এপ্রিলে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করেন তিনি। ১০ই জুন এমিলি নাটলিকে জেলে পাঠানো হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার কথা হ্যামিলটন কাউন্টি কমন প্লিয়াস বিচারক জেনিফার ব্রাঞ্চ। ওহাইওর আইন অনুযায়ী এমিলি নাটলির ১০ বছরের জেল হতে পারে। তবে সেখানে জেল একেবারে বাধ্যতামূলক নয়।
ওদিকে ৯ই জুন প্রসিকিউটররা স্থানীয় বেশ কিছু মামলার রায়ের বিষয় আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন। তাতে স্কুলে নিয়োজিত ব্যক্তিদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অভিযোগে জেলে পাঠানোর নজির তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ক্যালিরিয়ান হাই স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষিকা জুলি হাটজেরোয়েডারকে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে দুই বছরের জেল দেয়া হয়। ২০১৪ সালে ডাটের হাউ স্কুলের একজন স্পেশাল শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক মাউকেল জনসনকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়।
বাটলার কাউন্টিতে অবস্থিত নিউ মিয়ামি হাই স্কুলের একজন শিক্ষক জাস্টিন ম্যাডেনকে ২০১৫ সালে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং অন্য একজনকে রগরগে ম্যাসেজ দেয়ার অভিযোগে তিন বছরের জেল দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এমিলি নাটলি মাত্র ১৭ বছর বয়সী একটি ছাত্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং অন্যদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাকে জেল দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। তার শিকার শিক্ষার্থী, তার পিতামাতা এবং সেন্ট জাভিয়ার হাই স্কুলের কর্মকর্তারা চান এমিলি নাটলিকে ১০ বছরের জেল দেয়া হোক।