২৫ জুন ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালনের নির্দেশ কেন্দ্রের, তীব্র প্রতিবাদ মমতার
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন— ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। এই দিনেই দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়েছিল। সেই ঘটনাকে সামনে রেখে এবার কেন্দ্রীয় সরকার ২৫ জুনকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতে বলেছে দেশজুড়ে। সংস্কৃতি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। তবে কেন্দ্রের এই নির্দেশ নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন— ‘আপনারা গণতন্ত্র মানেন? আজ দেশে গণতন্ত্র আছে?’ স্পষ্ট জানান, এই দিবস পালন করবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে যে, ২৫ জুন রাজ্যগুলিকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করতে হবে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “জরুরি অবস্থার ৫০ বছর তো ২০২৪-এ শেষ হয়ে গিয়েছে, তা হলে ২০২৫ সালে কেন এই দিবস পালন করা হচ্ছে? এর পিছনে নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।” এরপরেই তিনি বিজেপিকে একহাত নেন।
মমতা বলেন, “দেশে তো প্রতিদিন গণতন্ত্র হত্যা করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এই দিবস পালিত হওয়া উচিত। সংবিধান রোজ বদলানো হচ্ছে। পরিকল্পিত ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” জরুরি অবস্থার সময় সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি অভিযোগ করেন, এখনকার পরিস্থিতিও সেই সময়ের মতো ভয়ানক। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনকালে প্রতিনিয়ত সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি নোটবন্দির প্রসঙ্গও তুলে আনেন এবং বলেন, সেই দিনটিকেও ‘ব্ল্যাক মানি ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলা এবং আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গও টানেন তিনি।
শেষে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনওভাবেই ২৫ জুন ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ পালন করবে না। কারণ তাঁর কথায়, এই বিজেপি সরকারের আমলে প্রতিদিনই সংবিধান হত্যা হচ্ছে। পালন করতে হলে প্রতিদিনই সংবিধান হত্যা দিবস পালন করতে হয়।