একাধারে অধ্যাপক, দু’বারের সাংসদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি—এই সব পরিচয়ের ভার নিয়েই বিতর্কে জড়ালেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তিনি রাজ্যের আইন ব্যবস্থাকে তুলনা করলেন ‘সোনাগাছির যৌনকর্মীদের’ সঙ্গে। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ৮ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, একটি গাড়ির ভিতরে বসে সুকান্ত মজুমদার পুলিশদের উদ্দেশে বলছেন, “আপনারা আইনটাকে সোনাগাছির সেক্স ওয়ার্কারে (যৌনকর্মী) পরিণত করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আইনটা।” একজন জনপ্রতিনিধি কীভাবে এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে সুকান্ত কুৎসিত কথা বলছেন। উনি চিৎকার করে অপমান করছেন সোনাগাছির সেক্স ওয়ার্কার বলে। তাঁদের নিম্নমানের দৃষ্টিতে দেখে তিনি রাজনৈতিক তুলনা করে বিকৃত বিবৃতি দিয়েছেন। এই মা-বোনেদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সোনাগাছির সেক্স ওয়ার্কার মানে বোঝেন? কতটা যন্ত্রণা, অশ্রু, কষ্ট, লড়াই থাকে বোঝেন? পাশাপাশি যদি ধরেন তাঁদের শ্রমের অধিকারের আওয়াজ উঠেছে সর্বত্র। সেখানে সোনাগাছি সেক্স ওয়ার্কারদের কথা বলছেন? আপনি কোন যুগে বাস করেন? মধ্যযুগে? এটা বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গি। এরা মা-বোনেদের কুৎসিতভাবে দেখে। একজন বলেছিলেন বীরবাহা হাঁসদা জুতার তলায় থাকা উচিত। এখন সোনাগাছির সেক্স ওয়ার্কারদের অপমান করেছেন। ওঁরা বাধ্য হয়ে একটা পেশায় আছেন। আপনার কোন অধিকার আছে সেই পেশায় থাকা মা-বোনেদের অপমান করার? তাঁদের জীবনযাপন, সংগ্রাম, বঞ্চনা, বৈষম্য থেকে শ্রমিক অধিকার নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। এটা একটা কী যন্ত্রণার জীবন। সুকান্ত মজুমদারকে সোনাগাছির যৌনকর্মীদের উদ্দেশে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করেছেন দেবাংশু ভট্টাচার্যও। তিনি অনুব্রত মণ্ডলের অতীত মন্তব্য উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘হে বিজেপি, পোড়া মুখ কত হবে কালো? অনুব্রতে অপরাধ, সুকান্তে ভালো?’
এখন প্রশ্ন উঠছে, এত বিতর্কিত মন্তব্য করার পর সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে বিজেপি কোনও অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নেয় কি না।