বিশ্ববাণিজ্যে বড়সড় ধাক্কা! হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান, কতটা প্রভাব পড়বে ভারতের ওপর?
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তা অবশেষে সত্যি হল। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম সামুদ্রিক বাণিজ্যপথ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিল ইরান। জানা গিয়েছে, দেশটির সংসদে এ নিয়ে একটি প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পাস হয়ে গিয়েছে। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি ভারতের ওপরও ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা।
যদিও ভারত সরাসরি ইরান থেকে খুব বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে না, তবুও দেশের তেল চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে বিদেশ থেকে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ তেল আসে হরমুজ প্রণালী দিয়ে। এই সমুদ্রপথ দিয়েই বিশ্ববাজারে প্রায় ২০ শতাংশ জ্বালানি তেলের বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ইরান যদি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে ভারতের আমদানি-বাণিজ্যে বড়সড় বাধা তৈরি হবে। এবার সেই আশঙ্কাই বাস্তবে পরিণত হল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করতে পারে—এই সম্ভাবনা মাথায় রেখে ভারত আগেই বিকল্প উৎস যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলি থেকে তেল আমদানির কথা ভাবতে শুরু করেছিল। তবে সে পথ পুরোপুরি কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এক্ষেত্রে, আমদানিতে ঘাটতি দেখা দিলে, তেলের দামও যথেষ্ট বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।
উল্লেখযোগ্য, ভারতীয় সময় অনুযায়ী, রবিবার ভোররাতে মার্কিন বোমারু বিমান বি-২ ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান-এর পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। এই গভীরভাবে মাটির নিচে থাকা স্থাপনাগুলিকে নিশানা করে ব্যবহার করা হয় আমেরিকার বিধ্বংসী বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা। হামলার পরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনেই-এর এক উপদেষ্টা স্পষ্ট বার্তা দেন—
“এবার আমাদের পালা। আমেরিকার নৌবহরে পালটা হামলা চালাবে ইরান।”
এছাড়াও, ইরানের তরফে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল— ‘বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের সরবরাহে প্রধান পথ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ সেই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত সেই পথ বন্ধ করে দিল ইরান।