বিচিত্রতা

যে গ্রামে পুরুষ প্রবেশ নিষেধ

যে গ্রামে পুরুষ প্রবেশ নিষেধ - West Bengal News 24

পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। তাই নিশ্চিন্তে জীবনটা কাটাতে পারছেন তারা। তাদের জিনওয়ার গ্রামটা পেরলেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার দাঁত-মুখ বের করা চেহারাটা অদ্ভুতভাবে ধরা দেয়। আইসিস জঙ্গিদের কালো পতাকা আর মুহুর্মুহু গ্রেনেডের হুঙ্কারে কার্যত জনপদ শূন্য। এর মধ্যেই নিজেদেরকে নিজেরা নিরাপত্তা দিয়ে একটি সুরক্ষিত গ্রাম তৈরি করেছেন। হ্যাঁ, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দিশ এলাকায় এই জিনওয়ার গ্রামে সব বাসিন্দাই নারী।

কৌতূহল নিশ্চয়ই হচ্ছে আপনার? তাহলে সেখানকার বাসিন্দা বছর আঠাশের যুবতি জ়য়নব গাবারীর কথায় আসা যাক। তিনি বলছেন, আমাদের জীবনে কোনও পুরুষের প্রয়োজন নেই। আমরা বেশ ভাল আছি। যে সব নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান, তাদের জন্য এটা আদর্শ জায়গা। জ়য়নবের মতো এখানকার সব নারীরা এই ভাবনাই বিশ্বাস করে। কিন্তু কেন?

জিনওয়ার গ্রামের প্রত্যেক নারীর জীবনে রয়েছে এক একটি মর্মান্তিক ঘটনা। কেউ আইসিস জঙ্গিদের হাতে দীর্ঘদিন যৌনদাসী হয়ে বর্বরোচিত অত্যাচারের মুখোমুখি হয়েছেন। কারওর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। কেউ বা জঙ্গি হামলায় সন্তান-স্বামী দুই খুইয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েছেন। কেউবা দিনের পর দিন ধর্ষণ হয়ে সন্তানসম্ভাবনা হয়ে পড়েছেন। জীবনের ঘটনা যাই হোক না কেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এক সরলরেখায় তারা যে অত্যাচারিত এবং অবহেলিত, আজ নির্দ্বিধায় বলছেন ওই গ্রামের নারীরা।

জিনওয়ার গ্রামে ঢুকতে গেলে সামনের ফটকে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন নারী। আইসিসদের হামলা রুখতে অতন্দ্র প্রহরীর মতো কড়া পাহারা দিচ্ছেন। কৃষিকাজ থেকে স্কুলে পড়ানো সব কাজে পারদর্শী তারা। স্থানীয় নারী এবং আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে এই গ্রাম। বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা নারী শক্তির নানা কাহিনি। শরণার্থী হয়ে না পালিয়ে আইসিস জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

স্বামী হারিয়ে বছর আটত্রিশের আমিরা মহম্মদ বলেন, নারী ছাড়া স্বাধীনতা পাওয়া যায় না। যত দিন না নারীরা শিক্ষিত হচ্ছেন, স্বনির্ভর হচ্ছেন এই সমাজও কখনও স্বাধীন হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমরা নিজেরাই কৃষিকাজ করি। ফসল ফলাই। সেই ফসল রফতানিও করি। আবার সন্তান পালনও করি। পুরুষবিহীন এই ছোট্ট গ্রামই এখন ‘শান্তির রাজধানী’ তৈরি হয়েছে বাশার-অল আসাদের যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য