হিটলারের কী তবে একটিই ছিল?
নাৎসি-নেতা অ্যাডলফ হিটলারের একটাই অণ্ডকোষ ছিল বলে রটনা থাকলেও এখন এটিকে সত্য ঘটনা হিসেবেই দাবি করলেন এক জার্মান ইতিহাসবিদ। প্রায় একশো বছরের পুরনো একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট ঘেঁটে এই তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতিহাসের বরাত দিয়ে নুরেমবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ফ্লিক্সম্যান বলেন, ১৯২৩ সালে প্রথম বার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হলে হিটলারকে মিউনিখের ল্যান্ডসবার্গ জেলে পাঠানো হয়। সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করেন চিকিৎসক জোসেফ স্টেইনার ব্রিন। পরে মেডিক্যাল রিপোর্টে তিনি লেখেন, ‘‘অ্যাডলফ এমনিতে নীরোগ ও শক্তিশালী হলেও তার ডান দিকের অণ্ডকোষটি অদৃশ্য বা ক্ষতিগ্রস্ত।’’
ফ্লিক্সম্যান দাবি করেন, প্রায় একশ’ বছর আগের হলেও জেলখানার এই রিপোর্ট একশত ভাগ নির্ভুল। কিন্তু এত দিন এর হদিস মেলেনি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে ইতিহাসবিদদের একাংশের বক্তব্য, ২০১০-এ নিলামে ওঠার আগে পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর এই মেডিক্যাল রিপোর্টের অস্তিত্বই জানা ছিল না।
তবে হিটলারের যৌনাঙ্গ যে স্বাভাবিক নয়, বরং অপরিপূর্ণ— এই রটনা দীর্ঘদিনের। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পার করে তিনি তখন প্রবল পরাক্রমী জার্মান চ্যান্সেলর। এক দেশে জন্মে অন্য দেশের মাথায়। ছড়ি ঘোরাচ্ছেন বিশ্বের একটা বড় অংশ জুড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায় ফের কাঁপতে শুরু করেছে সারা দুনিয়া। বস্তুত তখন থেকেই ‘একনায়কের’ নামে এই রটনা চাউর হতে থাকে গানে-গানে আর খুচরো ছড়ায়। এই রটনার পিছনের ইতিহাসবিদদের একাংশ দায়ী করছে ব্রিটেন শিবিরকেই।
কিন্তু সেই ‘তথ্য’ যে অমূলক নয়, সম্প্রতি হাতে পাওয়া মেডিক্যাল রিপোর্টের ভিত্তিতে এমনটাই দাবি করছেন জার্মান ইতিহাসবিদ। তবু ধোঁয়াশা কাটছে না। গোল পাকাচ্ছে ১৯৪৩-এর আরও একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট। হিটলার তখনও জীবিত। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন মার্কিন তদন্তকারীদের কাছে সেই রিপোর্ট পেশ করেন হিটলারের ছেলেবেলার এক চিকিৎসক। হিটলারের যৌনাঙ্গ ‘সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং অক্ষত’ বলেই দাবি করা হয় সেই রিপোর্টে।
তবে কি হিটলারের এই অঙ্গহানি জন্মগত নয়? চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, জন্মের অনেক পরেও অণ্ডকোষ বাদ যেতে পারে। তাই ১৯২৩-এর সেই মেডিক্যাল রিপোর্ট অভ্রান্ত মনে করছেন অনেকেই। পাশাপাশি, সামনে উঠে আসছে আরও একটি তথ্য। যাকে রটনা বলে মানতে নারাজ পোল্যান্ডের এক যাজক ও ইতিহাসবিদ। তাঁর কথায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে বিস্ফোরণের আঘাতেই হিটলারের এই অঙ্গহানি হয়। যে সেনা-চিকিৎসক জখম হিটলারের চিকিৎসা করেন, তিনি নিজেই সেই ইতিহাসবিদকে নাকি এই তথ্য দিয়েছেন।
তাই ইতিহাস থেকে পাওয়া সাম্প্রতিক নথি ঘিরে ফের ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। হিটলার কেন সন্তানহীন, এত দিনে সেই প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া গেল বলে দাবি ইতিহাসবিদদের একাংশের। বান্ধবী ইভা ব্রাউনের সঙ্গে যৌন মিলনের সময় তিনি যৌনশক্তিবর্ধক ওষুধ নিতেন বলে ‘রটনা’। এ বার তাকেও ‘ঘটনা’ বলতে চাইছেন অনেকে।