ওড়িশা সীমানা লাগোয়া ঝাড়গ্রাম জেলার হাতিবাড়ি চেকপোস্ট হয়ে ফিরলেন ভিনরাজ্যে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের ৯৫৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক
স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: ওড়িশা সীমান্ত থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা হয়ে কাতারে কাতারে পরিযায়ী শ্রমিক ফিরছেন এ রাজ্যে। আগেই কয়েক দফায় ফিরেছেন হাজারেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক। বৃহস্পতিবার ওড়িশা সীমানা লাগোয়া ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি এলাকা দিয়ে ফিরলেন আরও ৯৫৯ জন পরিযায়ী শ্রমিক। ওড়িশা হয়ে এসে হাতিবাড়ি সীমান্ত এলাকায় ওই শ্রমিকেরা ভিড় জমিয়েছিলেন।
এদিন প্রায় হাজারের কাছে শ্রমিকরা আসায় কি ভাবে তাদের ফেরানো হবে তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে প্রশাসন। ওই শ্রমিকদের থার্মাল স্ক্রিনিং করার পর খাবার দেওয়া হয়। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৬ টি সরকারি বাসে করে ওই শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হয় পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ,বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও হাওড়ার উদ্দেশ্যে। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ রাজ্যে বিভিন্ন জেলার ওই শ্রমিকেরা মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশার বিভিন্ন এলাকায় ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন। এলাকায় পর্যাপ্ত কাজ নেই। দিনমজুরিও সে ভাবে মেলে না। তাই এ রাজ্য ছেড়ে কাতারে কাতারে শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে যান।
ওই শ্রমিক দলের সেক ইউনূস, হাকিম চৌধুরী, মোহাম্মদ সোযেব আলিরা জানাচ্ছেন, ভিন রাজ্যে কাজ করলে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। সেই জন্যেই তারা ঠিকাদারের সঙ্গে চলে যান বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন কারখানা ও নির্মাণ সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করেন তাঁরা। লকডাউনে ভিন রাজ্যে আটকে পড়েছিলেন তাঁরা। ওড়িশা সীমানার হাতিবাড়ি দিয়েই ফিরছেন বেশিরভাগ পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
গত সপ্তাহে শ্রমিকদের ফেরা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। ওড়িশার থেকে পর্যাপ্ত তথ্য ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনকে না জানানোর ফলে ছিলেন হাতিবাড়ি চেকপোস্টে আটকে পড়েন কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক। পরে অবশ্য ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি ও বেসরকারি বাসে করে কয়েক ভাগে শ্রমিকদের গন্তব্যে ফেরত পাঠানো হতে থাকে। ওই শ্রমিকদের বড় একটা অংশ মুর্শিদাবাদ জেলার। রমজানে তারা ফিরছেন বাড়িতে। পবিত্র ঈদ তারা উদযাপন করতে চান নিজের এলাকায়। সেই কারণে প্রশাসনও দেরি না করে শ্রমিকদের ফেরানোর জন্যে সাধ্য মত চেষ্টা করছেন। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন,”এ পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি শ্রমিককে ফেরানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি বিভিন্ন জেলার শ্রমিকদের ফেরানো হয়েছে। এছাড়া ট্রেনেও শ্রমিকরা ঝাড়গ্রাম জেলায় ফিরছেন। শ্রমিকদের ফেরানোর আগে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা যেমন করা হচ্ছে, তেমনই ঝাড়গ্রাম জেলায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে তবেই এলাকায় ফেরানো হচ্ছে। ওই শ্রমিকদের ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।