ঝাড়গ্রাম

ঝাড়গ্রাম জেলার কৃতী শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র সাফ করেন শৌচাগার

ঝাড়গ্রাম জেলার কৃতী শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র সাফ করেন শৌচাগার - West Bengal News 24

স্বপ্নীল মজুমদার,ঝাড়গ্রাম: স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি, সমাজেরও শিক্ষক। তিনি সুব্রত মহাপাত্র। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া ব্লকের বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধানশিক্ষক। স্কুল ছুটির পর গ্রামে গ্রামে গিয়ে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রামের প্রান্তিক মহিলাদের একজোট করে লড়াই করছেন। প্রচার ও পোস্টার সাঁটাচ্ছেন। চোলাইয়ের অপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন।

তিনি আবার স্কুলের শৌচাগার পরিষ্কার করেন। স্কুল পড়ুয়াদের কাছে তাঁর বার্তা: ‘কোন কাজই ছোট নয়। মহাত্মা গান্ধীও নিজের হাতে শৌচাগার পরিষ্কার করতেন।’ নাবালিকার বিয়ে আটকানোর জন্য পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় ছাত্রীর অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘আঠারোর আগে বিয়ে নয়’ এই অঙ্গীকারপত্র আদায় ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রথম সুব্রতবাবুর উদ্যোগে তাঁর স্কুলে চালু হয়। নিজের স্কুলে ‘কন্যাশ্রী ব্রিগেড চালু করেছেন। কোনও গ্রামে নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে খবর পেলেই সেই তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয় প্রশাসনের কাছে। পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যে তিন নাবালিকার বিয়ে আটকে ওই পড়ুয়াদের ফিরিয়ে এনেছেন স্কুলের আঙিনায়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বা আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া ছেলে-মেয়েদের কথা ভেবে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে পশ্চিম বঙ্গের প্রথম ‘কন্যাশ্রী লাইব্রেরী’ স্থাপনের অন্যতম সহযোগী বা প্রধান পরামর্শদাতাও হলেন সুব্রতবাবু।

এই পাঠাগার থেকে প্রয়োজনীয় বইপত্র পেয়ে উপকৃত হয়েছে বহু প্রান্তিক পড়ুয়া। এখন ওই পাঠাগারের আহ্বায়ক হলেন সুব্রতবাবু। করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের মধ্যেও ছাত্র-ছাত্রীদের ডাকে সাড়া দিয়ে মেদিনীপুর থেকে ৮০ কিমি পথ মোটরবাইকে পাড়ি দেন তিনি। আবার এই লকডাউনের সময়ও মানবতার জয়গান গাইতে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে হাজির হন কুষ্ঠ কলোনিতে।

স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সহমর্মিতার পাঠ দেওয়ার জন্য কেরলের বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো বা প্রাক্তন ছাত্রর চিকিৎসার জন্য পড়ুয়াদের উৎসাহিত করার মত নানা সেবামূলক কাজে সবসময় নিয়োজিত তিনি। ক্লাসে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে নৈতিকতার পাঠ দেন, যাতে আগামীদিনে কোনও বৃদ্ধাশ্রম না থাকে। এমন সব কাজের জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে সামাজিক স্বীকৃতিও পেয়েছেন সুব্রতবাবু। বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, লেখিকা মীরাতুন নাহার, প্রাক্তন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, সঙ্গীতশিল্পী রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, অভিনেত্রী মিতা চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে সম্মান-স্বীকৃতিপত্র পেওয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলার এই কৃতী শিক্ষক।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য