এবার চিনা TikTok-এর জায়গা নিতে চলে এল ভারতীয় এই অ্যাপ ঘণ্টায় এক লক্ষের বেশি ডাউনলোড !
ওয়েবডেস্ক : ভারত-চিন সংঘর্ষ ও ২০ জন ভারতীয় সেনার শহিদ হওয়ার উত্তপ্ত আবহে সোমবার টিকটক-সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৯-এ ধারার ক্ষমতা প্রয়োগ করে সোমবার এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ভারতীয়দের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত। কারণ এই ধরনের চিনা অ্যাপ, মোবাইল ফোনে থাকলে তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেই সব অ্যাপ থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
চিন ও ইংল্যান্ডের পর ভারতে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইতিমধ্যেই টিকটক ইউজারের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২ বিলিয়ন। তার মধ্যে ৬১১ মিলিয়ন ব্যবহারকারীই ভারতের নাগরিক। টিকটক ভিডিও বানানো এবং শেয়ার করা আজকাল ইয়ং জেনারেশনের কাছে নতুন ফ্যাশন।
তারকা থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই মজে ছিলেন TikTok ভিডিও বানাতে। তাই কিছুদিনের মধ্যেই জনপ্রিয়তায় অনেক অ্যাপকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল এই অ্যাপটি। আর এই চিনা অ্যাপ টিকটক-কে টক্কর দিতে বাজারে এসেছে ভারতীয় অ্যাপ চিংগারি (Chingari)।
ছত্তিশগড়, ওড়িশা এবং কর্ণাটকের আইআইটি প্রফেশনালরা এই চিংগারি (Chingari) অ্যাপটি তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫ লক্ষ নেটিজেন এই অ্যাপ মোবাইলে ডাউনলোড করে ফেলেছেন।
Chingari-ও টিকটকের মতো ছোট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম। মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ৫ লক্ষের বেশি ডাউনলোড করা হয়েছে এই অ্যাপটিকে। এই অ্যাপটির ডেভেলপাররা জানিয়েছে যে, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া অ্যাপের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। কারণ ব্যবহারকারীরা চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ বয়কট করছেন।’
১৫ জুন লাদাখে গালওয়ান অঞ্চলে চিনা বাহিনীর অতর্কিত হামলায় কর্নেল-সহ ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে দেশজুড়ে চিনকে বয়কটের ডাক ক্রমেই জোড়াল হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরে, এই ৫৯টি সংস্থায় কর্মরত কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়বেন। একটি অনুমান অনুসারে, এই ৫৯টি সংস্থায় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার লোক কাজ করছেন। কিন্তু, আধিকারিকরা বলেন, এটা ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি স্টার্টআপের কাছে নিজেদের আত্মনির্ভরতা প্রমাণের
বড় সুযোগ। চিনা অ্যাপ ব্যানের খবর প্রকাশ হতেই ভারতীয় বিকল্প চিঙ্গারি ডাইনলোড করতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। টিকটক ব্যান হতেই ঘণ্টায় এক লাখ লোক ডাউনলোড করছেন এই অ্যাপ।
তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী,”এই পদক্ষেপ ভারতীয় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত করবে। দেশের সাইবার স্পেসকে সার্বভৌম রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
সরকারী আধিকারিকরা বলছেন ভারতের এই পদক্ষেপের ফলে চিনা অ্যাপ প্রস্তুতকারকদের ‘কয়েক লক্ষ ডলারের’ ক্ষতি হবে।
কেন্দ্র মনে করছে, বিরোধী শিবিরও এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে কেন না সংসদেও তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
সুত্র: News18