‘মৃত্যুর পরে দেহ পড়ে থাকা বাংলায় নতুন নয় : দিলীপ ঘোষ

কেষ্টপুরের করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাড়িতেই পড়ে থাকা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। কেষ্টপুরের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মৃত্যুর পরে দেহ পড়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়, সেই মে মাস থেকে দেখে আসছি। অসুস্থ এবং মৃতদের প্রতি অমানবিক ব্যবহার পশ্চিমবঙ্গে বারবার দেখছি। হাসপাতালে ৬ দিন আগে কারও মৃত্যু হয়েছে,সেই খবরও পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন,ডাক্তার নার্সদের বয়কট করা,পাড়ায় ঢোকতে না দেওয়া। অসুস্থ হলে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা। আগেও ছিল, এখনও বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তখন সংক্রমণ কম ছিল। মৃত্যু কম ছিল। সমস্যাও কম ছিল। যত সময় এগিয়েছে সংক্রমণ বেড়েছে, মৃত্যুও বেড়েছে। এছাড়া অমানবিক ব্যবহার অসুস্থ এবং মৃতের প্রতি এটা পশ্চিমবঙ্গে আমরা বার বার দেখেছি।
এছাড়া রাস্তায় ডেথ বডি পরে থাকা,হাসপাতালের সামনে অসুস্থ রোগী দীর্ঘক্ষণ পরে থাকা। এখনও সেটা ১৬-১৮ ঘন্টা ডেথ বডি পড়ে থাকছে। পরিবারের সদস্যরা ডেথ বডি আনতে গিয়ে পাচ্ছেন না। বলা হচ্ছে না, করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা। ডেথ বডি কোথায় গেল, তার সত্কার কিভাবে হল কেউ জানতে পারছে না। হাসপাতালে ভর্তি করার পর বাড়ি থেকে খাবার যাচ্ছে,সেই খাবার কেউ খেয়ে নিচ্ছে।
[ আরও পড়ুন : ‘যতটা পিঠে সহ্য হয় পেটান, সব ফিরিয়ে দেব, হুঁশিয়ারি দিলীপের ]
প্রসঙ্গত, মৃত্যুর ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাড়িতেই পরে রইল করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার দেহ। ১২ ঘন্টা পর মিলেছে ডেথ সার্টিফিকেট। স্বাস্থ্য দফতর,পুলিশ,পুরসভা সহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটি থানা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বাগুইআটি থানার কেষ্টপুরের তিন নম্বর সমরপল্লীর বাসিন্দা উষারানি মণ্ডল। বয়স ৭৫ বছর। তিনি গত ৪-৫ দিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে ভুগছিলেন। স্থানীয় একজন ডাক্তারকে দেখানো হয়। তার পরামর্শেই করোনা পরীক্ষা হয়। সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
তারপর পজিটিভ রিপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি করা যায়নি। অভিযোগ,সরকারি থেকে বেসরকারি সব হাসপাতাল বেড নেই বলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাড়িতেই কার্যত বিনা চিকিত্সায় তার মৃত্যু হয়ে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হওয়ার পর ডেথ সার্টিফিকেট পেতেও সমস্যা দেখা দেয়। পরে শুক্রবার সকালে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
[ আরও পড়ুন : বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রক্ষা করব : মমতা ]
তারপর দেখা দেয় সত্কারে সমস্যা। অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবন, বাগুইআটি থানার পুলিশ, পুরসভাসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। অবশেষে মৃত্যুর ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পর পুলসভা ও পুলিশের সহযোগিতায় মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শ্মশানে।
সুত্র : কলকাতা24×7